পাঁচ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া নির্ধারণ করে সরকারি ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় শহীদ মিনারে টানা অষ্টম দিনের মতো অবস্থান এবং অনশন কর্মসূচি পালন করেন তারা। একইসঙ্গে দুপুরে শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘ভুখা মিছিল’-এর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। 

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে আন্দোলনকারী ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’–এর সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “৫ শতাংশ বাড়িভাড়ার প্রজ্ঞাপন আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়।”

তিনি  জানান, আন্দোলনের মূল তিনটি দাবির মধ্যে এটি শুধু একটি। বাকি দুটি দাবি—১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন এখনো জারি হয়নি। 

দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সকল কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।” 

ঢাকার কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া স্কুলের শিক্ষক বদিউল হক বলেন, “আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।”

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, মূল বেতনের ওপর ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এর আগে সকালে অর্থ বিভাগ থেকে এক আদেশে জানানো হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) বৃদ্ধি করা হবে, যা ৬টি শর্তসাপেক্ষে আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। উপসচিব মিতু মরিয়ম স্বাক্ষরিত আদেশটি প্রকাশের পরপরই তা প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইনানীতে ‘ফাইভ স্টার’ খাবার এখন সাধারণ মানুষের নাগালে

সন্ধ্যা নামতেই কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকতের আকাশে ঝুলে পড়ে রঙিন আলো। দূরে ঢেউয়ের গর্জন, কাছে ভেসে আসে বারবিকিউয়ের ধোঁয়া। একপাশে কেউ চা হাতে গল্পে মশগুল, অন্যপাশে শিশুরা মকটেইলের গ্লাসে ফেনা উড়িয়ে হাসছে।

এমন মনোরম পরিবেশে সি পার্ল বিচ রিসোর্টে শুরু হয়েছে তিন মাসব্যাপী বর্ণিল ফুড ফেস্টিভ্যাল। যেখানে খাবার আর আনন্দ মিলেমিশে তৈরি করেছে এক অপূর্ব উৎসবের আবহ। আর ‘ফাইভ স্টার’ মানের খাবারগুলো খেতে পারবেন সাধারণ মানুষও। 

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইনানী সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’র সামনে মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন মাঠে বসেছে ঐতিহ্যবাহী কাঠ আর খড়ের ছাউনি ১২-১৫টি স্টল। 

পর্যটক, স্থানীয় ও অতিথিদের জন্য এখানে সাজানো হয়েছে দেশি-বিদেশি নানা মুখরোচক খাবারের সমাহার। এক স্থানে সমুদ্রের হাওয়া আর খাবারের গন্ধে তৈরি হয়েছে এক অন্যরকম আবেশ। প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলছে এই ফুড ফেস্টিভ্যাল।

মেন্যুতে রয়েছে ফাস্টফুড, আইসক্রিম ও ওয়াফলস, চা-কফি, জুস ও মকটেইল, চটপটি-ফুচকা, ডোনাট-নাগেটস, পিৎজা, মিষ্টান্ন, ফ্যামিলি ফ্রাই বাস্কেট, এগ-চিকেন-লিভার রোল, বিরিয়ানি, নুডুলসসহ নানা পিঠা-পায়েস ও ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবার।

ওই রিসোর্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ড ম্যানেজার মোহাম্মদ আবরার রাজ্জাক বলেন, “এটি শুধুই স্ট্রিটফুড নয়, বরং ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন। আমরা চেষ্টা করেছি দেশীয় স্বাদকে আন্তর্জাতিক পরিবেশে তুলে ধরতে। ফুড ফেস্টিভ্যালের প্রতিটি স্টলে রাখা হয়েছে খাবারের মান ও পরিচ্ছন্নতার সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা। দামও রাখা হয়েছে সবার নাগালে ১০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।”

তিনি আরো বলেন, “দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার এখানে রাখা হয়েছে, যেন পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণের পাশাপাশি বাংলাদেশের ভিন্ন ভিন্ন স্বাদও উপভোগ করতে পারেন।”

ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাসুদুল হক বলেন, “আমরা শুধু খাবার বিক্রির আয়োজন করিনি বরং একটি অভিজ্ঞতা তৈরি করেছি। সি পার্লের এই ফুড ফেস্টিভ্যালে পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের জন্য রয়েছে এমন এক পরিবেশ যেখানে খাবার, সংগীত ও সাগরের হাওয়া মিলে তৈরি করে স্মরণীয় মুহূর্ত। আমাদের লক্ষ্য পর্যটকরা যেন এখানে এসে সমুদ্রের সৌন্দর্যের সঙ্গে নানান রকমের খাবার উপভোগ করতে পারেন।”

ফুড ফেস্টিভ্যালের পুরো এলাকা সাজানো হয়েছে থিমভিত্তিক আলোকসজ্জায়। সন্ধ্যা নামতেই সৈকতের ঢেউয়ের শব্দে যোগ হয় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, মৃদু আলোর নিচে খাবারের গন্ধে ভরে যায় পরিবেশ। রিসোর্টের খোলা প্রান্তরে রাখা হয়েছে আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা, যেখানে বসে পর্যটকরা একসঙ্গে খাবার উপভোগ করছেন।

ঢাকা থেকে আগত দম্পতি মাসুম রানা ও মোবাশ্বেরা সালসাবিল বলেন, “আমরা ধানমন্ডি থেকে বেড়াতে এসেছি। ইনানীর সৈকতের এমন পরিবেশে ফুড ফেস্টিভ্যাল হবে ভাবতেই পারিনি। এখানকার খাবারের স্বাদ দারুণ, বিশেষ করে বিরিয়ানি আর মকটেইল। মনে হচ্ছে ঢাকার কোনো বড় রেস্টুরেন্টে খাচ্ছি কিন্তু খোলা আকাশের নিচে সাগরের হাওয়ায়!”

রাজধানীর উত্তরা থেকে সন্তানসহ ঘুরতে আসা পরিবারের নুসরাত জাহান মিনু বলেন, “আমার ছোট বাচ্চারা আইসক্রিম আর ওয়াফলস খুব পছন্দ করেছে। জায়গাটা খুবই সুন্দর ও নিরাপদ। সিপার্লের আয়োজনটি পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য একদম উপযুক্ত। দামও হাতের নাগালে, তাই ইচ্ছেমতো খাওয়া যায়।”

স্থানীয় ছেপটখালীর বাসিন্দা মো. শহিদুল আরাফাত বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষ হয়েও এখানে এসে ফাইভ স্টার রিসোর্টের খাবার খেতে পারছি, এটা বড় আনন্দের বিষয়। ১০০ থেকে ৫০০ টাকায় ভালো মানের খাবার পাওয়া যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। আশা করি এমন আয়োজন নিয়মিত হবে।”

এ আয়োজনকে ঘিরে এরইমধ্যে কক্সবাজারের পর্যটক ও স্থানীয়দের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। অনেকেই বলছেন, এমন আয়োজন সৈকত শহরে খাবার সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

তিন মাসব্যাপী এই ফুড ফেস্টিভ্যাল কেবল এক উৎসব নয়, বরং কক্সবাজারে পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাবি সায়েন্স ক্লাবের সায়েন্স ফেস্টিভালের সমাপনী
  • লালনের আখড়াবাড়িতে মানুষের ভিড়ে মুঠোফোন চুরি, আটক ৬
  • ‘মাছ উঠুক আর না উঠুক, হামার আনন্দখানই মেলা’
  • ইনানীতে ‘ফাইভ স্টার’ খাবার এখন সাধারণ মানুষের নাগালে
  • ঠাকুরগাঁওয়ে শুক নদীর অভয়াশ্রমে মাছ ধরা উৎসব
  • লালন উৎসবে লাখো মানুষের ভিড়
  • নিকট প্রতিবেশী উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণ
  • বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে খুলনায় বিজ্ঞান উৎসব
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় শরৎ উৎসব উদ্‌যাপন