একই দিনে গণভোট ও নির্বাচনের ঘোষণায় গণদাবি উপেক্ষা করা হয়েছে: গোলাম পরওয়ার
Published: 13th, November 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জনগণের অভিপ্রায় এবং গণদাবিকে উপেক্ষা করে একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণায় জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
আরও পড়ুনজাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে: প্রধান উপদেষ্টা১ ঘণ্টা আগেএ সময় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান, প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাব্বিশে নির্বাচন দেখতে হলে আগে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লাগবে: জামায়াত আমির
গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসা জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০২৬ সালে নির্বাচন দেখতে হলে আগে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লাগবে।
‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর গণভোট আয়োজন’সহ ৫ দফা দাবিতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পল্টন মোড়ে জামায়াতসহ আন্দোলনরত ৮ দলের সমাবেশে এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান। যারা জুলাই বিপ্লব মানবেন না, তাদের জন্য ২৬ সালে কোনো নির্বাচন নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমাদের দাবি কম, কিন্তু খুব সুস্পষ্ট। জুলাই বিপ্লবকে স্বীকৃতি দিতে হবে।...আর জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই হবে। এই আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
দেশের জনগণ নির্বাচনের আগে গণভোট চায় বলে দাবি করেন শফিকুর রহমান। গণভোটের বিষয়ে সব দল একমত উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাহলে তারিখ নিয়ে এই বায়নাবাজি কেন?
দলগুলো একমত হয়ে যখন জুলাই সনদে সাক্ষর করেছে, তখন গণভোট আগে হওয়াই যুক্তিযুক্ত মন্তব্য করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এর ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হলে কোনো সন্দেহ-সংশয় থাকবে না।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, জামায়াতসহ আট দল আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে জাতীয় নির্বাচন চায়। এটা নিয়ে কেউ যাতে ধূম্রজাল সৃষ্টির পাঁয়তারা না করে।
জামায়াত আমির বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণীত হয়েছে। গণতন্ত্রের কথা হলো সংখ্যাগরিষ্ঠরা যা বলবে, বাকিদের তাই মেনে নিতে হবে। কিন্তু কেউ কেউ সেটি মেনে নিতে রাজি নন। জুলাই সনদেই যদি কেউ গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখায়, জাতীয় নির্বাচনের প্রতি তারা শ্রদ্ধা কীভাবে দেখাবে?
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে জামায়াতের আমির বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের ভাষা বুঝতে হবে। (আগামী নির্বাচনে) কোনো দলের নয়, জনতার বিজয় হবে। জনতা কী চায়, কান পেতে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। যারা এটি বুঝতে ব্যর্থ হবেন, নিজের পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘দলগুলো ভদ্র ভাষায় কথা বলছে। ভদ্র ভাষায়ই কথা বলবে। তবে দাবির ব্যাপারে হিমালয়ের মতো অনড় থাকবে। কারণ এ দাবি জনগণের দাবি, কোনো দলের দাবি নয়। ফ্যাসিবাদের দাবি নয়। তাই ফ্যাসিবাদের দাবির কাছে দেশের মানুষ মাথা নত করবে না।’
আট দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তৈরি হোন। যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের দাবি আদায় না হবে, আমাদের আন্দোলন দুর্বার গতিতে চলতে থাকবে, ইনশাআল্লাহ।’
দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, সমাবেশের পর আট দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে মিলিত হবেন। দ্রুতই পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আট দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেন জামায়াতের আমির।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। সঞ্চালনা করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাইয়ুম ও সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক কে এম শরীয়াতুল্লাহ।
আরও পড়ুনপাঁচ দফা দাবিতে পল্টনে জামায়াতসহ আট দলের সমাবেশ শুরু২ ঘণ্টা আগেসমাবেশে বক্তব্য দেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজাদ্দিদ বিল্লাহ আল মাদানী, খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাসিত আজাদ ও যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক, মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির সরওয়ার কামাল আজিজি, মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন, সাধারণ সম্পাদক কাজী নিজামুল হক প্রমুখ।