যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪২ ফিলিস্তিনি নিহত
Published: 23rd, November 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ৪৯৭ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এসব হামলায় শনিবার পর্যন্ত ৩৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে রবিবার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় ভয়াবহ হামলা ইসরায়েলের, নিহত ২৫
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
গাজার মিডিয়া অফিসে যুদ্ধবিরতির মধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক হামলা ও বারবার অনুপ্রবেশের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
অফিস জানিয়েছে, শনিবার ২৭টি লঙ্ঘন রেকর্ড করা হয়েছে, যার ফলে ২৪ জন নিহত এবং ৮৭ জন আহত হয়েছেন। তারা এটিকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও যুদ্ধবিরতি চুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত মানবিক প্রোটোকলের ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে।
১০ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে- বেসামরিক নাগরিক, বাড়িঘর এবং বাস্তুচ্যুত তাঁবু লক্ষ্য করে ১৪২ বার গুলিবর্ষণ; ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে ২১টি স্থল অনুপ্রবেশ; ২২৮টি বিমান, কামান ও স্থল হামলা এবং ১০০টি বেসামরিক বাড়িঘর ও কাঠামো ধ্বংস করা।
ইসরায়েলি এসব কর্মকাণ্ড ‘সম্মিলিত শাস্তি’ ও ধ্বংসকে আরো বিস্তৃত করার প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছে।
অফিসটি জানিয়েছে, অভিযান ও অনুপ্রবেশ করে ৩৫ জন ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে। কারণ তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, ইসরায়েল ‘গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ একটি রক্তাক্ত নতুন বাস্তবতা তৈরি করার চেষ্টা করছে।’
গাজা সিভিল ডিফেন্স অফিস জানিয়েছে, যে শনিবার গাজার বেশ কয়েকটি এলাকায় বাড়িঘর ও একটি গাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা যুদ্ধবিরতির নতুন লঙ্ঘন।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে ইসরায়েল গাজার ৫০ শতাংশেরও বেশি এলাকা দখল করে রেখেছে।‘হলুদ রেখা’র মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জায়গাগুলো থেকে ইসরায়েলি সেনা মোতায়েনের এলাকাগুলোকে আলাদা করা হয়েছে।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সম্প্রতি হলুদ রেখার ভেতরে ঢুকে পড়ে হামলা বাড়িয়েছে, বিশাল এলাকা ধ্বংস করেছে এবং কাছাকাছি এলাকাগুলোকে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য বিপজ্জনক করে তুলেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। হাজারের বেশি মানুষ নিহত
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা যদ্ধে গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চলতি বছরের ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
বছরে বিশ্বের এক–তৃতীয়াংশ নারী সঙ্গীর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন: ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদন
বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী জীবনে কোনো না কোনো সময়ে স্বামী বা ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর হাতে শারীরিক অথবা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন—সংখ্যার হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় ৮৪ কোটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ৩১ কোটি ৬০ লাখ নারী ও মেয়েশিশু নিজের একজন ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর হাতে শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১৬৮টি দেশের সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে ডব্লিউএইচও এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে।এই সংখ্যা বিশ্বজুড়ে এই বয়সসীমার নারী ও মেয়েশিশুদের প্রায় ১১ শতাংশের সমান।
বুধবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের সঙ্গে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা মানবজাতির ওপর হওয়া প্রাচীনতম এবং সর্বব্যাপী অন্যায়। অথচ এখন পর্যন্ত এ নিয়ে সবচেয়ে কম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
গেব্রেয়াসুস আরও বলেন, ‘কোনো সমাজই নিজেকে ন্যায্য, নিরাপদ বা সুস্থ বলতে পারে না, যখন তার অর্ধেক জনসংখ্যা ভয়ের মধ্যে বাস করে। এই সহিংসতা শেষ করা কেবল নীতিগত বিষয় নয়; এটি মর্যাদা, সমতা এবং মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয়। প্রতিটি পরিসংখ্যানের পেছনে এমন একজন নারী বা মেয়ে রয়েছেন, যাঁর জীবন চিরতরে বদলে গেছে।’
নারীর প্রতি সহিংসতা মানবজাতির ওপর হওয়া প্রাচীনতম এবং সর্বব্যাপী অন্যায়, অথচ এখন পর্যন্ত এ নিয়ে সবচেয়ে কম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস, ডব্লিউএইচও মহাপরিচালকআগামী ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার অবসান দিবস পালিত হবে।
জাতিসংঘের ‘নারী ও মেয়েশিশুদের প্রতি সহিংসতা নির্মূলের আন্তর্জাতিক দিবস’–কে সামনে রেখে ডব্লিউএইচও এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১৬৮টি দেশের সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে ডব্লিউএইচও এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে।
ছবি: প্রথম আলো গ্রাফিকস