যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘যুবদের আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। আজ রোববার দুপুরে সাভারে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) তিনি প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এ প্রকল্পের আওতায় আত্মরক্ষার্থে জুডো, কারাতে, তায়কোয়ান্দো (মার্শাল আর্ট) ও শুটিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মোট ৮ হাজার ৮৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেবে বিকেএসপি। এর মধ্যে পুরুষ ৮ হাজার ২৫০ ও নারী ৬০০ জন। তাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর। অক্টোবরের মাঝামাঝিতে এ প্রকল্প অনুমোদন দেয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে আলোচনা দেখা গেছে।

এ প্রশিক্ষণের গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, ‘বিএনসিসিতে এর থেকেও অ্যাডভান্স লেভেলের ট্রেনিং দেওয়া হয় এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের বিষয়টি ইতিমধ্যে প্রচলিত। এয়ারগান দিয়ে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অন্যান্য দেশের সামরিক প্রশিক্ষণের তুলনায় আমাদের এ প্রশিক্ষণ মৌলিক এবং খুবই প্রাথমিক ধাপের। বাংলাদেশের একটি নির্দিষ্ট মহল থেকে অকারণেই এ বিষয়ে কিছু গুজব ছড়ানো হয়েছে।’

উপদেষ্টা জানান, যুবদের আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রকল্পের আওতায় সাভারে বিকেএসপির প্রধান এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট ৭টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৮৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি টাকা।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ সমাজ সবসময়ই দেশের প্রতিটি সংকট ও পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং সর্বশেষ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান প্রতিটি ঐতিহাসিক অধ্যায়ে তরুণরাই ছিলেন অগ্রভাগে। আমরা বিশ্বাস করি আত্মরক্ষায় সক্ষম তরুণ-তরুণীরাই পারে নিজের, সমাজের ও দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে।’

বিকেএসপি বলছে, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মরক্ষার কৌশল শেখার পাশাপাশি শরীরচর্চাও হয়, জীবনযাপনে পরিবর্তন আসে। যুবদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, শারীরিক ভারসাম্য অর্জন, শৃঙ্খল ও আত্মনিয়ন্ত্রণ, শারীরিক সক্ষমতা অর্জন এবং জীবনে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে এ প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য।

আরও পড়ুনঢাকা থেকে নির্বাচন করব, পদত্যাগ নির্ভর করছে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর: আসিফ মাহমুদ২ ঘণ্টা আগে

অনুষ্ঠান শেষে বিপিএলে ফিক্সিং বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। বিষয়টি এখন দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে অন্যতম আলোচিত বিষয়। সিদ্ধান্ত ছিল, স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযুক্ত হিসেবে নাম আসা খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের এবারের বিপিএলের বাইরে রাখা হবে। পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে গভর্নিং কাউন্সিল। পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অভিযুক্ত কোচ–কর্মকর্তারাই শুধু এবারের বিপিএলে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। তবে অভিযুক্ত খেলোয়াড়রা খেলতে পারবেন।

বিষয়টি নিয়ে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, ফিক্সিংয়ে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, বিসিবিও চায় না তাঁরা খেলায় অংশগ্রহণ করুক। তবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই তাঁকে বাদ দেওয়া যায় না। অভিযোগ প্রমাণিত হতে হবে এবং প্রমাণ পেতে হবে শাস্তি দেওয়ার জন্য। বিসিবি অবশ্যই ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

ক্রিকেটার জাহানারা আলমের যৌন হয়রানির অভিযোগসহ নারী খেলোয়াড়দের হয়রানির অভিযোগ প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ জানান, তিনি আশা করছেন, এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সব ধরনের খেলাধুলায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে। খেলাধুলায় নারীদের নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে সরকার। ইতিমধ্যে তারুণ্যের উৎসবের আওতায় সারা দেশে প্রায় ৮৫০টি নারী ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প র ব ক এসপ উপদ ষ ট ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় চার্চে হাতবোমা হামলার নিন্দায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

ঢাকায় খ্রিষ্টান উপাসনালয় লক্ষ্য করে হাতবোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এ ঘটনাকে লঘু চোখে না দেখে দায়ীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

রাজধানীর রমনায় সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রালে হাতবোমা বিস্ফোরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আজ রোববার রাতে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয়। তাতে গত ৮ অক্টোবর তেজগাঁও হলি রোজারিও চার্চে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে সরকার, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ঘটনাগুলোর সঠিক তদন্ত করে জড়িত দুস্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ জাতীয় কর্মকাণ্ডকে লঘু করে দেখা হলে তা হবে দেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।’

গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর রমনা থানার কাকরাইলে সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রালের প্রধান ফটক লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার মাজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, দুটি ককটেলের একটি বিস্ফোরিত হয়েছিল। তবে তাতে কেউ হতাহত হয়নি।
একই রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সেন্ট যোসেফ স্কুল লক্ষ্য করেও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।

এসব ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ দুই দিনেও চিহ্নিত কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: রমনায় গির্জা লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ

সম্পর্কিত নিবন্ধ