বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথম দিনে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আলোর মিছিল ও প্রদীপ প্রজ্বালন করেছেন সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী, ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়নের নেতা–কর্মীরা।

সোমবার সন্ধ্যায় এ শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনগুলোর নেতারা। এ সময় তাঁরা বলেন, বিজয়ের ৫৪ বছর পরও দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি মহান জনযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে নতুন করে চক্রান্ত চলছে।

উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিমের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল-এ-এলাহী মশগুল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, সাবেক সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বক্তব্য দেন। উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন। পরে সমাবেশে উপস্থিত সবাইকে শপথবাক্য পাঠ করান মাহমুদ সেলিম।

এর আগে সন্ধ্যা ছয়টায় শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে আলোর মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে গিয়ে শেষ হয়। আলোর মিছিলে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত বিভিন্ন গণসংগীত সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করা হয়। পরে শিখা চিরন্তনে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল র ম ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাদেশ জারি: গুমের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড

গুমের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে অধ্যাদেশ জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

সোমবার গভীর রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অধ্যাদেশের গেজেট পোস্ট করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

সুপ্রিম কোর্টের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, অধ্যাদেশ জারি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে রাষ্ট্রপতির সই

জারি করা গেজেটে গুমের ধরন ও শাস্তি সম্পর্কে স্পষ্টভাবে আইন ও বিধিবিধান তুলে ধরা হয়েছে।

দেশের সংবিধানে ব্যক্তির সুরক্ষার অধিকার এবং গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে নাগরিকের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকারের ভিত্তিতে গুম প্রতিরোধ ও গুমের মতো জঘন্য অপরাধের সাজা নিশ্চিত করতে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে বলে গেজেটে বলা হয়েছে।

গুমের সাজার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা অন্য কোনো কর্মকর্তা অথবা ব্যক্তি যদি কাউকে অবৈধভাবে আটক, গ্রেপ্তার বা অপহরণ করেন; গুমের তথ্য গোপন করেন বা আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করেন, তাহলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই ধরনের দোষ প্রমাণ হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন বা অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। একই সঙ্গে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা হবে।

অবশ্য গেজেটের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার করে আইনে বর্ণিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মেজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার আগ পর্যন্ত যদি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে ওই সময়ের তথ্য গোপন রাখা হয়, তাহলে তা গুম হিসেবে গণ্য হবে না।

গুমের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গেজেটে বলা হয়েছে, গুমের শিকার কোনো ব্যক্তির যদি মৃত্যু হয় বা তার লাশ পাওয়া যায় অথবা গুমের পর পাঁচ বছরেও যদি তার খোঁজ না পাওয়া যায়; তাহলে দোষীর প্রাণদণ্ড, যাবজ্জীবন বা অন্য কোনো মেয়াদে দণ্ড হবে। এই দণ্ড ছাড়াও অপরাধীর ১ কোটি টাকা জরিমানা হবে।

গেজেটে বলা হয়েছে, গুমের আলামত নষ্ট, বিকৃত বা পরিবর্তন করলে সাত বছরের দণ্ড ও সঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা হবে।

কোনো ব্যক্তি গোপন আটক-কেন্দ্র নির্মাণ, স্থাপন বা ব্যবহার করলে তারও অনধিক সাত বছরের দণ্ড এবং সেই সঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা হবে। 

দণ্ডের পরিধির মধ্যে আরো রয়েছে গুমে ইন্ধন, সহায়তা, অনুমতি, প্ররোচণার মতো অপরাধ। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধ্বস্তনদের এরূপ আদেশ-নির্দেশ দিলে বা বাধ্য করলেও আইনে বর্ণিত সমরূপ সাজা ভোগ করবেন তারা।

গুমের অভিযোগ আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কয়েকটি মামলা গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগের শাসন আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সামরিক ও বেসামরিক নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নামে মামলা চলছে।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ