নতুন নতুন উপায়ে দল ঘোষণাতে নিউজিল্যান্ডের বিশেষ খ্যাতি আছে। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের দল ঘোষণা করেছিলেন খেলোয়াড়দের পরিবার। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণাতেও আছে নতুনত্ব।

অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনার, যিনি কি না চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেবেন, তিনিই সবার নাম ঘোষণা করলেন। সবার সঙ্গে জুড়ে দিলেন একটি করে বিশেষণ। এই যেমন অলরাউন্ডার মাইকেল ব্রেসওয়েলকে ‘বিস্ট’, লকি ফার্গুসন ‘থান্ডারবোল্ট’।

নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট হয়তো এবারের দল ঘোষণাটাকে খুব ‘আড়ম্বরহীন’ রাখতে চেয়েছে। স্যান্টনার শুধু ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকেছেন। ফাঁকা গ্যালারিতে বসে নামগুলো বলে গেছেন।  

পাকিস্তানে ফেব্রুয়ারি-মার্চে হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টের দলে রাখা হয়েছে দুই বিশেষজ্ঞ পেসার বেন সিয়ার্স ও উইল ও’রুর্ককে। অলরাউন্ডার নাথান স্মিথও দলে থাকছেন। সিয়ার্স গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের রিজার্ভ হিসেবে ছিলেন।

নিউজিল্যান্ড স্কোয়াড:
মিচেল স্যান্টনার(অধিনায়ক), মিচেল ব্রেসওয়েল, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভিন কনওয়ে, লকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, টম ল্যাথাম, ড্যারিল মিচেল, উইল ও’রুকর্ক, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, বেন সিয়ার্স, নাথান স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন, উইল ইয়ং

চোটের কারণে গত এপ্রিলের পর মাঠে ফিরেছেন ৯ জানুয়ারি, সুপার স্ম্যাশ টুর্নামেন্টে। এখনো ওয়ানডে অভিষেকই হয়নি এই পেসারের। এরপরও তাঁর ওপর ভরসা রেখেছে নিউজিল্যান্ড। ও’রুর্ক অবশ্য বেশ ছন্দে আছেন। বিশেষ করে টেস্টে। ১০ টেস্টে তাঁর উইকেট ৩৬টি, যেখানে তিনি ওয়ানডে খেলেছেন ৬টি (৮ উইকেট)।

আরও পড়ুনতামিম, সেসবই তাহলে মনে রাখি৯ ঘণ্টা আগে

প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড বৈশ্বিক ইভেন্টে নেতৃত্ব দেবেন স্যান্টনার। দলে যথারীতি আছেন কেইন উইলিয়ামসন ও টম ল্যাথাম। চ্যাম্পিয়ন ট্রফির আগে একই দল পাকিস্তানে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে।

পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ছাড়া এই সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাও। যদিও আরব-আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টিতে খেলায় এই সিরিজে লকি ফার্গুসনের স্ট্যান্ডবাই হিসেবে পেসার জ্যাকব ডাফিকে রাখা হয়েছে। ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলা উইলিয়ামসন ও কনওয়ের জন্যও কঠিন হবে। কারণ, তারাও ‘এসএ ২০’ নিয়ে ব্যস্ত।

‘এসএ ২০’-এর ফাইনাল ৯ ফেব্রুয়ারি, ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টির ফাইনাল এর পরের দিন। আর ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ৮ ফেব্রুয়ারি।

নিউজিল্যান্ডের হেড কোচ গ্যারি স্টিড এই দল নিয়ে বলেছেন, ‘এখন আমাদের কাছে দারুণ কিছু ক্রিকেটার আছে, যা দল নির্বাচনের আলোচনা চ্যালেঞ্জিং করেছে। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত ওই স্কোয়াডই বিবেচনা করেছি, যাদের পাকিস্তান ও আরব-আমিরাতে ভালো করার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা আছে।’

আরও পড়ুনসকাল থেকে রাত—আজ দিন শুধুই টি-টোয়েন্টির২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা  ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ