Samakal:
2025-07-11@19:13:06 GMT

বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ল ১১৪%

Published: 11th, July 2025 GMT

বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ল ১১৪%

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৮৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। আগের তিন মাসের তুলনায় বেড়েছে ৭৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিনিয়োগ হিসেবে মোট তহবিল এসেছে ১৫৭ কোটি ৬১ লাখ ডলার। মুনাফা, আন্তঃকোম্পানি ঋণ পরিশোধসহ বিভিন্ন উপায়ে বাইরে গেছে ৭১ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এ হিসাবে নিট বিনিয়োগ এসেছে ৮৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। গত বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে নিট বিনিয়োগ এসেছিল ৪০ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। আগের প্রান্তিক গত অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে এসেছিল ৪৯ কোটি ডলার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশি বিনিয়োগ গতিশীল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। জমিসহ বিভিন্ন সেবা নেওয়া সহজ করা হয়েছে। এসব কারণে বিনিয়োগ বেড়ে থাকতে পারে। সরকার পতনের পর নানা ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা না থাকলে বিনিয়োগ আরও বাড়ত বলে তারা মনে করেন।

সামান্য বাড়ল বিদেশি ঋণ

সরকারি-বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ সামান্য বেড়ে মার্চ শেষে ১০৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৭৬ কোটি ডলারে উঠেছে। বর্তমান বিনিময়হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। বিদেশি ঋণ বেশ কিছু দিন ধরেই এ রকম অবস্থায় রয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ডলার। গত বছরের জুন শেষে ছিল ১০ হাজার ৩৪১ কোটি ডলার। বিদেশি ঋণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। বিগত সরকারের সময়ে নেওয়া ঋণের বড় অংশই ছিল উচ্চ সুদের বাণিজ্যিক ঋণ। বর্তমান সরকার বাণিজ্যিক ঋণ কমিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণ নিচ্ছে বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত বিদেশি ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে রয়েছে ৮ হাজার ৪৮৯ কোটি ডলার। গত ডিসেম্বর শেষে যা ৮ হাজার ৪৩১ কোটি ডলার ছিল। গত বছরের জুনে ছিল ৮ হাজার ২৮১ কোটি ডলার। এ ছাড়া বেসরকারি খাতে গত মার্চ শেষে বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৮৭ কোটি ডলারে। গত ডিসেম্বরে যা ১ হাজার ৯৪২ কোটি ডলার ছিল। গত বছরের জুন শেষে ছিল ২০ হাজার ৬০ কোটি ডলার।

গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে আইএমএফ ঋণের দুই কিস্তির ১৩৪ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। এর পর বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবিসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে আরও ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ এসেছে, যা কম সুদের। এদিকে রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে গত জুন শেষে ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।

চলতি সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ২০২ কোটি ডলার পরিশোধের পর গ্রস রিজার্ভ নেমেছে ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে। বিপিএম৬ অনুযায়ী ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সময় রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে  রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গত বছর র জ ন ড স ম বর ১০ হ জ র অন য য় সরক র দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ব্যাংক ঋণ সরকারের

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিভিন্ন বিদেশি উৎস থেকে অর্থবছরের শেষ সময়ে বিপুল পরিমাণের ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে অভ্যন্তরীণ উৎসে ঋণ কমেছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুধু শেষ দিনই ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকার আগের দেনা কমিয়েছে ৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত অর্থবছর ব্যাংক খাতে নিট ঋণ বেড়েছে ৭২ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও যা ২৬ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা কম। যা গত চার অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

প্রতি বছরের বাজেটে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। রাজস্ব আদায় কমায় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে বেশি ঋণ নিতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায় কমে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৭৭ কোটি টাকায় নেমেছে। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৯৫ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছর এনবিআরের রাজস্ব আদায় হয় ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। এর মানে আগের অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আয় কম হয়েছে ১৪ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। এরপরও গত অর্থবছরের শেষ সময়ে ব্যাংক ঋণ কমেছে মূলত প্রচুর বিদেশি ঋণের কারণে। জুনের শেষ সপ্তাহে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ পেয়েছে সরকার। যে কারণে অনেক ঋণ সমন্বয় হয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘গত অর্থবছরের শেষ দিকে আইএমএফসহ বিভিন্ন উৎস থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ পেয়েছে সরকার। যে কারণে দেশীয় অনেক ঋণ সমন্বয় করা হয়েছে। ফলে শেষ সময়ে সরকারের ব্যাংক ঋণ কমেছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুনের শেষ দিন ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। এক দিন আগে অর্থাৎ ২৯ জুন পর্যন্ত স্থিতি ছিল ৫ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হয়। তবে ৫ আগস্ট-পরবর্তী নতুন সরকার সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনে। আর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ঘোষণা দেন, ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখা হবে। সে হিসাবে সরকার লক্ষ্যমাত্রার অনেক কম ঋণ নিয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে সরকারের ব্যাংক ঋণ লক্ষ্যমাত্রার নিচে থাকলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকে অনেক বেড়েছে। গত অর্থবছর বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা ঋণ নেয় সরকার। এ পরিমাণ ঋণ বেড়ে জুন শেষে স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকে আগের ৬৩ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকার দেনা কমিয়েছে সরকার। এতে করে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থিতি নেমেছে ৯২ হাজার ৫১ কোটি টাকা। ব্যাংকের বাইরে অভ্যন্তরীণ উৎসে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ ৫ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা কমেছে। ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্রের বাইরেও সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। সেখান থেকে গত অর্থবছর সরকার আরও ৪৮ হাজার ৩২২ কোটি টাকা নিয়েছে। সব মিলিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের নিট ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা বেড়ে স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ব্যাংক ঋণ সরকারের
  • ‘আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবে নয়, নিজস্ব উদ্যোগেই আর্থিক খাতে সংস্কার’