বিএনপির সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক, নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা
Published: 12th, January 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। বৈঠকের পর বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈঠকে নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যত তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব, বিএনপির পক্ষ থেকে সেদিকেই জোর দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বেলা সাড়ে তিনটায় ইইউ রাষ্ট্রদূতের পতাকাবাহী গাড়ি বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, সবার মনে প্রশ্ন আছে, সেই বিষয়গুলো বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। একটি হচ্ছে নির্বাচন, কবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, আমাদের ভাবনা কী? সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের ভাবনা কী? মূলত নির্বাচনের রোডম্যাপ—এই বিষয়টা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা যেটা বলে আসছি, এই বছরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। অন্য কোনো ভাবনার দিকে না গিয়ে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনের দিকে গিয়ে দেশে আগামী দিনে একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা প্রয়োজন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য।’
আমীর খসরু বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দেশ বেশি দিন চলতে পারে না। অগণতান্ত্রিক সরকারের রাজনৈতিক ওয়েট (ওজন) থাকে না, মবিলাইজেশন প্রসেস (সংহত করার প্রক্রিয়া) থাকে না, জনগণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকে না, জনগণের কাছ থেকে কোনো ফিডব্যাক (প্রতিক্রিয়া বা মতামত) পাওয়া যায় না। সুতরাং একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যত তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব, সেদিকে আমরা জোর দিয়েছি।’
সংস্কার নিয়েও আলোচনাইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে সংস্কার নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়ে যেটি আলোচনা হয়েছে, সেটা হচ্ছে যে কটি বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে যেতে পারব, সেগুলো ইমিডিয়েটলি (তাৎক্ষণিকভাবে) করা যেতে পারে। সেগুলোর ব্যাপারে সময় নেওয়ার কোনো কারণ নেই। আর যেগুলো ঐকমত্য হবে না, সেগুলো আগামী দিনে নির্বাচনে প্রতিটি দল জনগণের কাছে নিয়ে যাবে.
বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘যেহেতু ইইউর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে আমাদের, সঙ্গে তাদের অর্থনীতির...। যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তা অব্যাহত থাকবে কি না? আমাদের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে বিএনপির অর্থনৈতিক সফলতা আমরা বলেছি। আগামী দিনে দেশের অর্থনীতিকে এই গর্তের মধ্য থেকে তুলে আনার জন্য বিএনপি যে কর্মসূচি ইতিমধ্যে নিয়েছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে যদি কোনো কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেটা অবশ্যই আমরা সমর্থন করব। আমাদের দলের অর্থনৈতিক কর্মসূচি আছে। জনগণ আমাদের নির্বাচিত করলে সেই কাজগুলো আমরা করব।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও উল্লেখ করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের বিএনপি স্বাগত জানায়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে ৩৫ পুলিশ সদস্যের পোশাকে থাকবে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’
কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩৫ জন পুলিশ সদস্যের পোশাকের সঙ্গে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ সংযুক্ত করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির এই ক্যামেরার মাধ্যমে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের অডিও ও ভিডিও কার্যক্রম রেকর্ড করা যাবে।
আজ বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিভিন্ন থানা ও ইউনিটের ৩৫ জন পুলিশ সদস্যের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ক্যামেরা হস্তান্তর করা হয়। বডি ওর্ন ক্যামেরা বিতরণ করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দিন শাহীন।
এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা জনগণের পুলিশ হতে চাই। বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, জনগণের আস্থা অর্জন এবং পুলিশের পেশাগত আচরণ পর্যবেক্ষণ সহজ হবে। পর্যটননির্ভর শহর কক্সবাজারে প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তাব্যবস্থার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।’
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে থানা ও ফাঁড়ির টহল দল, ট্রাফিক ইউনিট, ডিবি এবং বিশেষ অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যদের মধ্যে এই ক্যামেরা বিতরণ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিটেও এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা হবে।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বডি ওর্ন ক্যামেরার রেকর্ড সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় সার্ভার ও সফটওয়্যার সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ক্যামেরা ব্যবহারে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই উদ্যোগ পুলিশের পেশাদারত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি মিথ্যা অভিযোগ থেকে সুরক্ষা, তদন্তে স্বচ্ছতা এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে।