জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিতে অনশনরত অবস্থায় ৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। রোববার রাত পৌনে দশটার দিকে অনশন চলা অবস্থায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।

অসুস্থরা হলেন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি এ কে এম রাকিব, ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের সোহান প্রামানিক ও আতিকুর রহমান তানজিল, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ, ফিন্যান্স বিভাগের রাকিব ও দর্শন বিভাগের তৌহিদ।

এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সোয়া ৬টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন জবি উপাচার্য। শিক্ষার্থীদের নিকট কাজের সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন তিনি। এরপর শিক্ষার্থীরা ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের আসার দাবি জানান। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে বসে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

তাজাম্মুল হক ও শিক্ষক সমতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীনও। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তিন দাবি হলো- সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয় ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

এদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান উপাচার্য। তবে শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখান করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেহেতু আমাদের দাবির সঙ্গে একমত আমাদের দাবি এখন ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের কাছে। তারা আমাদের জানাক।

এর আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, তোমরা যে দাবি করছ সেই দাবি আমারও। এ বিষয়ে আজ মন্ত্রণালয়ে চিঠি গেছে। আমরা আজ সারাদিন তোমাদের খোঁজ রাখছি। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা আমাদের এ আন্দোলনের ফলাফল পাব। আমরা কথা দিচ্ছি, আমরা তোমাদের দাবি অনুযায়ী কাজ করব। ছাত্র প্রতিনিধি নিয়ে আমরা একটা কমিটি গঠন করে সব বিষয় জানাব।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।

স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে