৭৫ দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র নিয়ে গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগানে উৎসবটির আয়োজন করেছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। আজ উৎসবের তৃতীয় দিনে রয়েছে নানা আয়োজন।

জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন

সকাল সাড়ে ১০টায় রয়েছে কোরিয়ান সিনেমা ‘আইল অফ স্ন্যাকস’। ১১৫ মিনিট ব্যাপ্তির এ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ইউ-মিন কিম। দুপুর ১টায় রয়েছে নরাওয়ের সিনেমা ‘কোরিওগ্রাফি টুওয়ার্ডস লস’। ৬১ মিনিটের এ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আইরিন মার্গ্রেথ কালটেনবর্ন। বেলা ৩টায় থাকছে ভারতের সিনেমা ‘বেলাইন’। ৮৫ মিনিটের এ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন সৌমিক রায়। সন্ধ্যা ৫টায় থাকছে জাপানের সিনেমা ‘ইউকিকো এ.

কে.এ’। ৯৮ মিনিটের এ সিনেমাটি বানিয়েছেন নাওয়া কুসাবা। রাত ৭টায় দেখানো হবে বাংলাদেশের সিনেমা ‘এখানে নোঙ্গর’। ১১৭ মিনিটের এ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন মেহেদী রনি। 

জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন

সকাল সাড়ে ১০টায় দেখানো হবে ইরানের দুটি সিনেমা। এগুলো হলো– ‘চবোকসাভার’। ৩২ মিনিটের এই সিনেমাটি বানিয়েছেন হাদি শরিয়তি। এ সিনেমার পর থাকছে ৮৯ মিনিটের ‘ইরান নওরোজ’। এটি পরিচালনা করেছেন সোহেল মোভাফফগ। দুপুর ১টায় দেখানো হবে ফ্রান্সের সিনেমা ‘কুমাভা: হোয়াট কামস ফ্রম, সাইলেন্স’। ১০৯ মিনিটের এ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন সারাহ মালগোলে। বেলা ৩টায় থাকছে বুরকিনা ফাসোর ‘দ্য ডেসটিনি অব এ ট্রাক ড্রাইভার’। ৭৮ মিনিটের এ সিনেমার নির্মাতা কাউসে ইসুফ। বিকেল ৫টায় দেখানো হবে রাশিয়ার ‘দ্য রেলওয়ে’। ১০৩ মিনিটের এ সিনেমা পরিচালনা করেছেন আলেক্সি ফেড্রোচেঙ্কো। রাত ৭টায় দেখানো হবে বাংলাদেশের চারটি স্বল্পর্দৈঘ্য সিনেমা। এগুলো হলো– ‘ফুলের পোশাক পোড়ান’, ‘নিষ্প্রাণ’, ‘সেনাপতি দীঘি’ এবং ত্রিরাশ। 
জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমি

সকাল সাড়ে ১০টায় দেখানো হবে রাশিয়ান সিনেমা ‘ফিলাটিলিয়া’। ১১৩ মিনিটের এ সিনেমা পরিচালনা করেছেন নাটালিয়া নাজারোভা। দুপুর ১টায় প্রদর্শিত হবে চায়নার ‘লাইফ অব লুও সাং’। ৯৫ মিনিটের এ সিনেমা নির্মাণ করেছেন ঝাং গুওডং। বেলা সাড়ে ৩টায় দেখানো হবে ইরানের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘আই পলিথ্রোনা স্টো পেজোড্রোমিও’ এবং ‘গ্রিস স্টপ ইট’। এরপর থাকছে ভারত ও রাশিয়ার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমা ‘উই শুড মেক মুভিস এবাউট লাভ’। ৭৪ মিনিটের এ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন রোমান মিখাইলভ। রাত ৯টায় থাকছে পাকিস্তানের ‘ইন ফ্লেমস’। ৯৮ মিনিটের এ সিনেমাটি বানিয়েছেন জারার কান। 

আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা

সকাল সাড়ে ১০টায় থাকছে ইরাকের ‘দ্য লাস্ট পোস্টম্যান’। ৮৮ মিনিটের এ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন সাদ আলেসামি। দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে থাকছে ভারতের ‘ইন দ্য বেলি অব অ্যা টাইগার’। ৯২ মিনিটের এ সিনেমার নির্মাতা জটলা সিদ্ধার্থ। বেলা সাড়ে ৪টায় থাকছে তুর্কির ‘হোয়েন দ্য ওয়ালনাট লিভস টার্ন ইয়োলো’। ১০১ মিনিটের এ সিনেমার নির্মাতা মেহমেত আলী কোনার। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে। 

এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র‌্যান্ডেল। 

এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব। 

১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।

রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”

চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”

গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”

শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক