লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা. হাসানুল বান্না চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এ অভিযোগ দাখিল করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা.

ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে র‍্যাব। হত্যার পর তাকে বাসার ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। গভীর রাতে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
 
নিহতের স্ত্রী মারজিয়া ফয়েজ জানান, রাত ১২টার দিকে র‍্যাবের একটি দল গেট ভেঙে বাসায় ঢুকে বিভিন্ন রুম তল্লাশি চালায়। এক পর্যায়ে ডা. ফয়েজকে তাদের সঙ্গে বাসার ছাদে যেতে বলেন। এ সময় তিনি ছাদে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমি অসুস্থ। তাই সিঁড়ি বেয়ে ছাদে যেতে কষ্ট হবে। আমাকে নিতে হলে থানায় নিয়ে চলেন। এ সময় তারা ফয়েজকে আটক করে জোরপূর্বক বাসার ছাদে নিয়ে প্রথমে গুলি করে। পরে সেখান থেকে নিচে ফেলে দেয়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গভীর রাতে হাসপাতাল এলাকায় তার মরদেহ পড়ে আছে বলে আমরা খবর পাই। 

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়নাল আবেদিন জানান গভীর রাতে কে বা কারা হাসপাতালের নিচে তার মরদেহ ফেলে চলে যায়। মরদেহের মাথায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর বাদ জোহর শহরের উত্তর তেমুহনী লিল্লাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে ওই মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

সরকার কোনো কঠিন বার্তা দিতে পারেনি

দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে জরুরি ছিল সমঝোতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা সুদূরপরাহত হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে; কিন্তু তা হয়নি।

সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের দিন ধার্য করার প্রাক্কালে সেই পুরোনো দিনের মতোই লকডাউনের নামে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে একধরনের শঙ্কা, সংশয় তৈরি হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ রকম অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। এটি হচ্ছে দুই ভাবে। একটি হলো সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে, আরেকটি হলো নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—এই দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের অদক্ষতা ও নিজেদের প্রতি আস্থাহীনতা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

আরও পড়ুনস্থিতিশীলতা বিঘ্নের পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়২৭ মিনিট আগে

এ রকম পরিস্থিতিতে দরকার ছিল, সরকার একটি কঠিন বার্তা দেবে, যাতে সাধারণ জনগণ আস্থা পাবে, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা ভয় পাবে। কিন্তু সে জায়গায় সরকার কঠিন কোনো বার্তা দিতে পারেনি। এ রকম হলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এই সুযোগে সমাজে যে দুর্বৃত্তরা রয়েছে, তারাও বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। হত্যা, খুন, গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা, বিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা নানা জায়গায় ঘটে চলেছে। বিগত দিনে স্বৈরাচারী সরকার যে রকম কোনো ঘটনা ঘটার পরপরই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না করে নিজেদের মতো করে বক্তব্য দিত, অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকেও একই রকমের বক্তব্য আসছে। এ ধরনের বক্তব্য প্রকারান্তরে অপরাধীদের অপরাধ করতে উৎসাহী করে তোলে।

এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করতে হয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে।

নূর খান: মানবাধিকারকর্মী

সম্পর্কিত নিবন্ধ