এইচএমপি ভাইরাস: ৬ ধরনের রোগীকে সতর্কতার পরামর্শ
Published: 16th, January 2025 GMT
দেশে এইচএমপি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে এই অবস্থায় ভাইরাস থেকে বাঁচতে ৬ ধরনের জটিল রোগীকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ৬টি জটিল রোগ হলো-ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ, সিওপিডি (দীর্ঘস্থায়ী অবরোধক ফুসফুসীয় ব্যাধি), অ্যাজমা ও ক্যান্সার।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে এক বিশেষ সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য জানান।
তারা বলছেন, একাধিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়া এই রোগ শনাক্তকরণের জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। আর আক্রান্তরা লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিলে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল ও পুষ্টিকর খাবার খেলে রোগটি ভালো হয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
৩০ সেকেন্ড হাঁটলে কি ক্যালোরি খরচ হয়?
শীতে কুসুম গরম পানি পান করলে শরীরে যা ঘটে
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা.
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদ মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত ও ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী।
এ সময় অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, “এইচএমপিভি একটি পুরাতন ভাইরাস। এই ভাইরাসের বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। হাত ধোয়া ও মাস্কের ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস শনাক্তকরণের পরীক্ষা ও এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউর সব রকমের প্রস্তুতি রয়েছে।”
অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, “এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ না থাকলেও সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে।বিশেষ করে যেসব রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদেরকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।”
অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্ক নয়। এই বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি অত্যন্ত জরুরি। ভাইরাসটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ না থাকলেও উচ্চমাত্রার ঝুঁকি রয়েছে এমন সব রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে।”
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত বলেন, “হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস এক ধরনের আরএনএ ভাইরাস যা সাধারণত মানুষের শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এটি অন্যান্য ফ্লু যেমন-ইনফুলুয়েঞ্জা রেস্পিরেটরি সিনসাইশিয়ালের মতোই একটি ভাইরাস।সর্বপ্রথম নেদারল্যান্ডে ২০০১ সালে এইচএমপিভি মানুষের শরীরে শনাক্ত হয় এবং বাংলাদেশে প্রথম ২০১৭ সালে এইচএমপিডি সংক্রমণ শনাক্ত হয়।”
তিনি বলেন, “এটি আসলে মারাত্মক কোনো ভাইরাস নয়, এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত জ্বর, কাশি, নাক বন্ধ, গলাব্যথা এসব লক্ষণ নিয়ে আসতে পারে, এছাড়া চামড়ায় র্যাশ এবং কখনও কখনও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে যেমন যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ, সিওপিডি, অ্যাজমা অথবা ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ আছে তাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “ভাইরাসটি সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি ও কাশির ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়, তাই কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে খুব সহজেই এই রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। যেমন-বাইরে গেলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সাবান, পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু দিয়ে মুখ ঢেকে নিতে হবে, আর টিস্যু না থাকলে হাতের কনুই ভাঁজ করে সেখানে মুখ গুঁজে হাঁচি কাশি দিতে হবে, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, জনসমাগম বা ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে ইত্যাদি। সাধারণত শীতকাল ও বসন্তকালে এ রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়।”
এইচএমপিভি একটি সংক্রামক রোগ এবং যেভাবে এটি ছড়ায়, তার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে করোনার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনার মতোই হাঁচি, কাশি, আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি অবস্থান, করমর্দন এবং স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এ রোগটি।
তবে, ভাইরাসটিকে নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে অভিমত চিকিৎসক ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন, রোগটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং এর প্রতিরোধের সঙ্গে করোনা বা কোভিডের প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাদৃশ্যও রয়েছে। চীনের যেসব হাসপাতালে এইচএমপিভি রোগীরা ভর্তি হয়েছেন, তাদের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ ব্যবহার না করে প্রচলিত ওষুধই দেওয়া হচ্ছে।
রোগটি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলো হলো-নিয়মিত দিনে কয়েকবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং কোনো কিছু স্পর্শ করার পর হাত ভালোভাবে ধোয়া এবং শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলে বাড়িতে অবস্থান করা।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এইচএমপ ভ সতর ক থ ক আতঙ ক ত স ধ রণত
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।
প্রশিক্ষণের বিষয়১. বেসিক কম্পিউটার,
২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,
৩. ইন্টারনেট,
৪. গ্রাফিক ডিজাইন,
৫. ফ্রিল্যান্সিং,
৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,
২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,
৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,
৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,
৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে১. ঢাকা,
২. চট্টগ্রাম,
৩. রাজশাহী,
৪. খুলনা,
৫. বরিশাল,
৬. সিলেট,
৭. দিনাজপুর,
৮. গোপালগঞ্জ।
আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,
২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,
৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,
৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,
৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।
নিবন্ধন ফিমনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।
দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে