ছাত্রলীগের দখল সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি
Published: 11th, July 2025 GMT
রক্তস্নাত ‘জুলাই বিপ্লব’-পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর, ক্যাম্পাসে এক সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীর বিতর্কিত আচরণ এবং মন্তব্য ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্রলীগের দখল সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টার বিরুদ্ধে চমেকে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এই ক্যাম্পাসকে ছাত্রলীগ বা কারও দোসরদের নিরাপদ আশ্রয় হতে দেওয়া হবে না। যারা অপরাধ করেছে, তাদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমার অপব্যবহার করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তারা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের সংস্কৃতি পুনর্বহালের জন্য ক্যাম্পাসের কিছু সুবিধাভোগী বহিরাগতদের নিয়ে চাপ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবিলম্বে আদেশ জারির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ হাসান নিয়ন (৬৪তম ব্যাচ) ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সেই সঙ্গে তিনি জুনিয়র ব্যাচকে হুমকিও দেন। ৭ জুলাই ফেসবুকে দেওয়া তাঁর পোস্টে সাবেক ছাত্রলীগারদের জন্য ঘোষিত সাধারণ ক্ষমা নিয়েও অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য করেন তিনি। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাসের সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীরা মিলে নিয়নের রুমে গিয়ে তাঁকে ডাইনিংয়ে ডেকে আনে। অভিযোগ উঠেছে, ঘটনার দিন বহিরাগত কয়েকজনকে হোস্টেল এলাকার পাশে ডেকে এনে উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে নিয়নপন্থিরা। পরে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে এ ঘটনা তদন্তে কলেজ কর্তৃপক্ষ কমিটি গঠন করে। তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত নিয়নকে কলেজের সব একাডেমিক কার্যক্রম ও ছাত্রাবাসে অবস্থান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সমাবেশে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবরার আল ফয়সাল সিয়াম (৩১তম বিডিএস), মিনহাজুল হক (৬২তম এমবিবিএস), ইনতিসার আহমেদ (৬২তম এমবিবিএস) ও শাহ মোহাম্মদ ইমরান (৬৫তম এমবিবিএস)। সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা দুই দফা দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো– চমেক ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন বা জুলাই বিপ্লবকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার ন্যূনতম সাহস দেখালে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বহিরাগত প্রবেশ, জড়ো হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এ বিষয়ে প্রশাসনিক আদেশ জারি করতে হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮
কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।
আরো পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।
খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ