তাড়াশে কৃষকদল সভাপতির পদে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক
Published: 17th, January 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৮ ইউনিয়নের কমিটি গঠনে কয়েকটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি গোপাল চন্দ্রের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ওই ইউনিয়ন কমিটিগুলোতে পতিত আওয়ামী লীগের অনুসারীদেরও পদ-পদবী দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা দেশিগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.
এ ঘটনায় গত শনিবার দুপুরে তাড়াশ প্রেসক্লাব চত্বরে কৃষক দলের ইউনিয়ন কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন দেশিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি বিক্ষুদ্ধ প্রতিবাদকারীরা বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে তাড়াশ এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
যা নিয়ে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে নড়েচড়ে বসে সংগঠনটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিষয়টি তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান করা হয়েছে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. দুলার হোসেনকে। সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান সবুজ ও প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক মো. আব্দুল মালেককে। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি স ম আফছার আলী এবং সাধারণ সম্পাদক এ টি এম আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তাড়াশ উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি গোপাল চন্দ্র অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দেশিগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাছেদ আলীকে দেশিগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি করেন। তাই পদবঞ্চিত প্রকৃত ইউনিয়ন কৃষক দলের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানায় এবং তাড়াশ উপজেলা ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি, কৃষকদলের নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।
এদিকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কমিটি করার অভিযোগ অস্বীকার করে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তাড়াশ উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি গোপাল চন্দ্র।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ড় শ উপজ ল ব এনপ র স তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা