Samakal:
2025-09-17@22:26:49 GMT

ঘাসফড়িং এবং পিপিলিকার দল

Published: 17th, January 2025 GMT

ঘাসফড়িং এবং পিপিলিকার দল

সবুজ রঙের একটা ঘাসফড়িং। উড়ে এসে তনয়দের বারান্দার সিঁড়ির নিচে আছড়ে পড়লো। অমনি একটি শব্দ হলো। কোথা থেকে যে এটি এলো, কে জানে। তবে পতঙ্গটিকে একপলক দেখার জন্য কৌতূহলী হয়ে উঠলো তনয়। 
এক পা দু-পা করে সে এগিয়ে গেলো ওটির দিকে। ঘাসফড়িংটার লম্বা পা দুটো ভাঙা। শরীরের সাথে কোনোরকম ঝুলে আছে। মেঝেতে ওটি চিৎ হয়ে পড়ে রইল। দেখে মনে হলো-এখন-তখন অবস্থা ওর। বারান্দার সিঁড়িতে বসে আধমরা ঘাসফড়িংটার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনাবিভোর তনয়।
সে সময় একটি খয়েরি ডানার চিল ওদের উঠোনের আকাশে একবার চক্কর দিয়ে গেলো। চিলটা আনমনে চিঁউ চিঁউ গান গেয়ে উঠলো। তনয় ঘাসফড়িংটির দিকে অপলক তাকিয়ে রইলো। ততোক্ষণে নিথর হয়ে গেছে বেচারা ঘাসফড়িং। দুটো ছোটো মাছি কী মনে করে যেন তার ওপর দিয়ে কয়েকবার ওড়াউড়ি করলো। তারপর ওরা নিরুদ্দেশ হয়ে গেলো। কোথায় যে গেলো কে জানে। 
অল্পক্ষণ পরই কোথা থেকে যেন কয়েকটি পিপিলিকা ব্যস্ত হয়ে ছুটে এলো। তনয় মনে মনে ভাবলো, তবে কী মাছি দুটো গিয়ে পিপিলিকাদের খবরটা দিয়ে এলো! যে, এখানে একটা খাবার পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি যাও। গিয়ে ভাগ বসাও। 
দেখতে না-দেখতে ঘাসফড়িংটির কাছে অনেক পিপিলিকা এসে জড়ো হলো। এতো পিপিলিকা যে-কোথা থেকে আসছে, তনয় ঠিক বুঝতে পারছে না। পিপিলিকা আরও আসছে। আরও। আরও। দূর থেকে ওরা সারি বেঁধে খাবারের কাছে ছুটে আসছে। 
তনয় ভাবলো, দেখি তো গিয়ে ওরা কোথা থেকে আসছে। ভেবে পিপিলিকার সারিটা দেখে সে এগিয়ে চললো। বেশিদূর যেতে হলো না তাকে। মিটার তিনেক পথ গিয়েই সে পিপিলিকার বাসাটি পেয়ে গেলো। 
তনয় দেখতে পেলো দেয়ালের গায়ে সরু একটি ফাটল। ফাটলের ভেতর থেকে সারি বেঁধে পিপিলিকা বেরিয়ে আসছে। সৈনিকদের মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ পিপিলিকার সারি। মার্চ করতে করতে যেন ওরা বেরিয়ে আসছে। পিপিলিকার সারিটা দেখে তনয় মনে মনে ভাবলো, ওরা কতই না পরিশ্রমী! নিজের খাবার নিজেরাই জোগাড় করে। 
এরই মধ্যে পিপিলিকারা মৃত ঘাসফড়িংটিকে কামড়ে ধরে টানাটানি শুরু করে দিলো। প্রথমে ওরা ঘাসফড়িংটিকে টেনে নড়ানোর চেষ্টা করলো। যথাযথ নাড়াতেও পারলো। পরে তারা এটিকে কামড়ে ধরে নিয়ে তাদের বাসার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলো।
তনয় অবাক হয়ে ভাবতে লাগলো, এতো ছোটো ছোটো পিপিলিকা! অথচ কী চমৎকারভাবেই না খাবারটাকে কামড়ে ধরে বাসায় নিয়ে চলেছে। আচ্ছা, ঘাসফড়িংটাকে বাসা পর্যন্ত নিয়ে যেতে ওদের কতো সময় লাগতে পারে? এক ঘণ্টা। না, এক ঘণ্টায় ওরা কাজটা পারবে বলে মনে হয় না। কম করে হলেও ওদের তিন ঘণ্টা সময় লাগার কথা। তনয় মনে মনে ভাবলো, আচ্ছা দেখিই না ওরা কী করে।
মিনিট দশেক পর দেখা গেলো, ওরা ঘাসফড়িংটাকে মাত্র দুই সেন্টিমিটার পথ নিয়ে যেতে পেরেছে। তাতে কী! কাজটি করতে গিয়ে ওরা যে-হাল ছেড়ে দেয়নি, এটিই বড়ো কথা। আশ্চর্য ধৈর্য পিপিলিকার। আশ্চর্য অধ্যবসায়ী ওরা। আনন্দের সাথে ওরা কাজটি করে চলেছে। 
যতোই ওরা  ওরা তো আর জানে না যে-বিনা পরিশ্রমেই খাবারটা তাদের বাসার কাছে পৌঁছে গেছে। পরে যখন বুঝতে পারল, তখন মনে হলো খুশিই হয়েছে ওরা। তাই সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে স্রষ্টাকে অনেক ধন্যবাদ দিলো। কারণ ওদের ধারণা, মহান স্রষ্টাই তাদের পরিশ্রম কমিয়ে দিয়েছেন। 
তুমুল উদ্দীপনা নিয়ে পিপিলিকারা খাবারটা বাসার ভেতর নিয়ে যাওয়ার কাজে মেতে ওঠলো। এতো বড়ো একটা ঘাসফড়িং! ওরা এটিকে বাসার ভেতরে নিয়ে যাবে কেমন করে? দেয়ালের ফোকর দিয়ে সেটিকে ঢোকানো তো মুশকিল। ওরা প্রথমে ওটার লম্বা পা দুটো কেটে আলাদা করে নিলো। পরে মাথাটা কাটলো। তারপর শরীরটাও। এভাবে পিপিলিকারা তনয়ের চোখের সামনে আস্ত ঘাসফড়িংটাকে টুকরো টুকরো করে ওদের বাসায় নিয়ে গেলো। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ