পোলট্রি খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ফিড, এক দিন বয়সী বাচ্চা, ওষুধ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করছে; যা প্রান্তিক খামারিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বাড়লেও তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। 
গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এ খাত রক্ষায় পোলট্রি বোর্ড গঠন করার দাবি করেছেন সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার।

বিপিএ যখন খামারিরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না অভিযোগ তুলেছে, তখন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি দুইশ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০ থেকে ২১০ টাকা দরে। সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। কারওয়ান বাজারের মা নুরজাহান চিকেন হাউসের বিক্রয়কর্মী এরশাদ মিয়া সমকালকে বলেন, প্রতিবছর শীতে মুরগির চাহিদা বাড়ে। কারণ এ সময় শহরে-গ্রামে সব জায়গায় নানা ধরনের অনুষ্ঠান থাকে। 
বিপিএ বলেছে, করপোরেট গ্রুপগুলোর পরিকল্পিত আধিপত্য বিস্তারের কারণে পোলট্রি খাত গভীর সংকটে পড়েছে। তাদের দৌরাত্ম্য এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশের প্রান্তিক খামারিরা খামার চালাতে পারবেন না।

বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, কিছু সরকারি অসাধু কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার কারণেও পোলট্রি খাত বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করার নামে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা প্রান্তিক খামারিদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করছে। তিনি বলেন, তাদের উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বাড়ছে। তারা পণ্যের ন্যায্য দর পাচ্ছেন না। ফলে খামারিরা তাদের খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে ডিম ও মুরগির উৎপাদনে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, পোলট্রি খাতকে রক্ষা করতে হলে প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য দ্রুত পোলট্রি বোর্ড গঠন করতে হবে। এছাড়া প্রান্তিক খামারিদের জন্য সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ, প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দামের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ফিড ও ডিওসির দাম নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। পাশাপাশি অসাধু কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: করপ র ট

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’

অন্তবর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সবাইকে ধৈর্য ধরে বিচার প্রক্রিয়া, সংস্কার এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সারাদেশ এখন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার অপেক্ষায় রয়েছে।”

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাহাঙ্গীরনগর বিবিদ্যালয়ে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, অদম্য ২৪ উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্মিত জুলাইয়ের ভিডিও ও ফটো ডকুমেন্টারি উপভোগ করেন।

আরো পড়ুন:

জবির পরিত্যক্ত ডাস্টবিনগুলো সংস্কার করল ছাত্রদল

রাকসু থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে যারা

আদিলুর রহমান খান বলেন, “১ বছর আগে বাংলাদেশে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেই ঐক্যই পারে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে। বিচার প্রশ্নে বলতে চাই কোনো অবস্থাতেই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া সরকার বিচারের ক্ষেত্রে দুর্বলতা স্কোপ রাখবে না। খুব দ্রুতই বেশ কয়েকটি বিচারের কাজ দৃশ্যমান হবে।”

তিনি আরো বলেন, “তরুণ ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি এবং দেশকে বাঁচানোর জন্য জীবন দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।” এছাড়া স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য-২৪’ বিভাজন ভুলে একাত্ম হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

সমাপনী বক্তব্যে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “সংঘবদ্ধ আন্দোলনে ৫ আগস্ট আমরা বিজয় অর্জন করেছি। এর মানে এই নয় যে, অন্য যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আর স্বর আপনারা শুনবেন না। আপনারা দেখবেন, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা সচেতন এবং কথা বলার ব্যাপারে উন্মুক্ত।”

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আবার স্মরণ করিয়ে দিলাম, আমরা যদি বাংলাদেশে কোনো অশান্তি দেখি, বৈষম্য দেখি, পরাজয়ের কালো মেঘ দেখি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য সংগ্রামীরা আবারো তাদের সেই কার্যক্রম শুরু করবে। গোটা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে, আবার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।

অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ -উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলমসহ জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য দেন।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ