মহাগ্রন্থ আল কোরআন বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অনন্য গাইডলাইন দিয়েছে। কোরআনে কারিম মানুষকে এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে এবং তাঁর সৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দেয়। এটি জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার তাগিদ দেয়।
আল কোরআনের নির্দেশ– শোষণ, বঞ্চনা দূর করে সমাজের সর্বত্র ইনসাফ প্রতিষ্ঠা, দুষ্টকে দমন এবং শিষ্টের লালন। অর্থাৎ সৎ ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতা দান এবং অপরাধী ও অসৎ লোকদের অন্যায়-অবিচারকে প্রতিহত করতে হবে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহতাআলা সুরা মায়েদার ১৫-১৬ আয়াতে এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে এক নূর এবং উজ্জ্বল কিতাবও। এর মাধ্যমে আল্লাহ সেসব লোককে শান্তির পথে পরিচালিত করেন, যারা তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলে। আর তিনি নিজ আদেশে তাদের অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান এবং সরল সুদৃঢ় পথে তাদের পরিচালিত করেন।’
সামাজিক ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমাজের মানুষকে কষ্ট দেওয়ার নাম ইসলাম নয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.
পবিত্র কোরআন পারস্পরিক সম্মান, ভক্তি ও মর্যাদা প্রদর্শন বিষয়ে উত্তম শিক্ষা দিয়েছে।
পবিত্র কোরআনের সুরা হুজুরাতের ১২ আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘হে যারা ইমান এনেছ! তোমাদের কোনো জাতি অন্য কোনো জাতিকে উপহাস করবে না। হতে পারে তারা এদের চেয়ে উত্তম।’
শান্তি বিনষ্ট করার আরেকটি অন্তরায় হলো মিথ্যা, প্রতারণা ও কপটতা। যার দরুন মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা অনেকটাই কমে যায়। এ বিষয়টি এমন পর্যায়ে গেছে, ব্যক্তি বা সমাজ কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে সহমর্মিতার নামে সাহায্য দেওয়ার সময় বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়ে গোলাম বানিয়ে রাখে, যা শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। আল কোরআন সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সহিংসতা ও অন্যায়ের বিরোধিতা করে। এটি মানুষকে পারস্পরিক সম্মান ও সহনশীলতার সঙ্গে জীবনযাপনে উৎসাহিত করে। আল কোরআন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে আলোচনা, সমঝোতা ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পথ বাতলে দেয়। এটি মানুষকে পারস্পরিক দোষারোপ ও বিদ্বেষ পরিহার করে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করে। কোরআন মানুষের মধ্যে পরোপকারিতা, সহানুভূতি ও ভালোবাসার শিক্ষা দেয়। এটি অভাবী ও দুঃখী মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে উৎসাহিত এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
কোরআন মাজিদ সমাজে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের ওপর গুরুত্ব দেয়। এটি মানুষকে অন্যায়-অনাচার থেকে দূরে থাকতে এবং সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে কাজ করতে উৎসাহিত করে। আল কোরআন বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে উৎসাহিত করে। এটি মানুষকে তাদের নিজ নিজ বিশ্বাস ও রীতিনীতি পালনের স্বাধীনতা দেয় এবং অন্যের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রতি সহনশীল হতে উৎসাহিত করে।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উৎস হ ত কর আল ক রআন চর ত র অন য য় আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোরআনের নির্দেশনা
মহাগ্রন্থ আল কোরআন বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অনন্য গাইডলাইন দিয়েছে। কোরআনে কারিম মানুষকে এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে এবং তাঁর সৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দেয়। এটি জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার তাগিদ দেয়।
আল কোরআনের নির্দেশ– শোষণ, বঞ্চনা দূর করে সমাজের সর্বত্র ইনসাফ প্রতিষ্ঠা, দুষ্টকে দমন এবং শিষ্টের লালন। অর্থাৎ সৎ ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতা দান এবং অপরাধী ও অসৎ লোকদের অন্যায়-অবিচারকে প্রতিহত করতে হবে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহতাআলা সুরা মায়েদার ১৫-১৬ আয়াতে এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে এক নূর এবং উজ্জ্বল কিতাবও। এর মাধ্যমে আল্লাহ সেসব লোককে শান্তির পথে পরিচালিত করেন, যারা তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলে। আর তিনি নিজ আদেশে তাদের অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান এবং সরল সুদৃঢ় পথে তাদের পরিচালিত করেন।’
সামাজিক ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমাজের মানুষকে কষ্ট দেওয়ার নাম ইসলাম নয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের মানুষের হৃদয়কে সন্তুষ্ট করতে, ক্ষুধার্তকে আহার করাতে, বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করতে, ব্যথিত লোকের ব্যথার উপশম করতে ও অন্যায়ভাবে কষ্টপ্রাপ্ত লোকের কষ্টের প্রতিকার করতে নির্দেশ দিয়ে এ কাজগুলোকে সর্বোত্তম কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি আমাদের চরিত্রবান হতে উৎসাহিত করেছেন। কেননা, সামাজিক শান্তির জন্য প্রয়োজন উত্তম চরিত্রসম্পন্ন মানুষ। এ বিষয়ে হাদিস শরিফে বর্ণিত, ‘মহানবী (সা.) বলেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই উত্তম, যার স্বভাব চরিত্র উত্তম’। (বুখারি ও মুসলিম) যিনি ব্যক্তি, পরিবার ও গোষ্ঠীস্বার্থের প্রতি নয় বরং সর্বজনীন স্বার্থের দিকে অধিক গুরুত্ব দেন, তিনিই উত্তম চরিত্রবান।
পবিত্র কোরআন পারস্পরিক সম্মান, ভক্তি ও মর্যাদা প্রদর্শন বিষয়ে উত্তম শিক্ষা দিয়েছে।
পবিত্র কোরআনের সুরা হুজুরাতের ১২ আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘হে যারা ইমান এনেছ! তোমাদের কোনো জাতি অন্য কোনো জাতিকে উপহাস করবে না। হতে পারে তারা এদের চেয়ে উত্তম।’
শান্তি বিনষ্ট করার আরেকটি অন্তরায় হলো মিথ্যা, প্রতারণা ও কপটতা। যার দরুন মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা অনেকটাই কমে যায়। এ বিষয়টি এমন পর্যায়ে গেছে, ব্যক্তি বা সমাজ কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে সহমর্মিতার নামে সাহায্য দেওয়ার সময় বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়ে গোলাম বানিয়ে রাখে, যা শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। আল কোরআন সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সহিংসতা ও অন্যায়ের বিরোধিতা করে। এটি মানুষকে পারস্পরিক সম্মান ও সহনশীলতার সঙ্গে জীবনযাপনে উৎসাহিত করে। আল কোরআন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে আলোচনা, সমঝোতা ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পথ বাতলে দেয়। এটি মানুষকে পারস্পরিক দোষারোপ ও বিদ্বেষ পরিহার করে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করে। কোরআন মানুষের মধ্যে পরোপকারিতা, সহানুভূতি ও ভালোবাসার শিক্ষা দেয়। এটি অভাবী ও দুঃখী মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে উৎসাহিত এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
কোরআন মাজিদ সমাজে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের ওপর গুরুত্ব দেয়। এটি মানুষকে অন্যায়-অনাচার থেকে দূরে থাকতে এবং সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে কাজ করতে উৎসাহিত করে। আল কোরআন বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে উৎসাহিত করে। এটি মানুষকে তাদের নিজ নিজ বিশ্বাস ও রীতিনীতি পালনের স্বাধীনতা দেয় এবং অন্যের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রতি সহনশীল হতে উৎসাহিত করে।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি