ওএসডি যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান
Published: 19th, January 2025 GMT
যোগদানের ১০ দিনের মাথায় ওএসডি হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খোন্দকার কামাল হাসান। আজ রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মাহবুব আলম সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। ৮ জানুয়ারি যশোর শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান হিসাবে পদায়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে, কামাল হাসানের স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক ড.
ড. খোন্দকার কামাল হাসান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকা, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর আশির্বাদপুষ্ট, শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। দুই মাস আগে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন ওএসডি হন খোন্দকার কামাল হাসান। সেই বিতর্কিত ব্যক্তিকে দুই মাসের ব্যবধানে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করে পুরস্কৃত করা হয়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষক নেতারা।
জানা যায়, ১৪তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ব্যাচের খোন্দকার কামাল হাসান ১৯৯৩ সালের নভেম্বরে মেহেরপুর সরকারি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালের নভেম্বরে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে বদলি হন। ২০১১ সালে বগুড়ার গাবতলী সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। ৫ বছর পর সরকারি আজিজুল হক কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে বদলি হন। ২০১৮ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন।
অভিযোগ রয়েছে, মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগের তৎকালীন এমপি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী পরবর্তীতে মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি পান। তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তৎকালীন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশেই ২০২৩ সালে ১৪ নভেম্বর বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন খোন্দকার কামাল হাসান। যোগদানের পর ১৮ নভেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ওই সময় শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারতের ছবি কলেজের অফিসিয়ালি ফেসবুক আইডি ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন খোন্দকার কামাল হাসান। ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের ওপর ককটেল হামলা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। কামাল হাসান ছাত্রলীগের পক্ষে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ১১ মাস অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিতর্কিত ভূমিকা ও আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তাদের তোপের মুখে শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেন। দুই মাস পরেই তাকে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে পদায়ন করে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ বিএনপি-জামায়াতের ত্যাগী শিক্ষকরাও। অবশেষে আজ যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে ওএসডি করা হলো ড. কামাল হাসানকে।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর খোন্দকার কামাল হাসান বলেন, বদলি এটা চাকরির নিয়ম। এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমার দুই ছেলেও অংশ নিয়েছিল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ওএসড র সরক র মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।
তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।
এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।
আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।
এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।
ঢাকা/আমিনুল