মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ও পতনঊষার ইউনিয়নের সংযোগস্থল কেছুলুটি ও ধূপাটিলা গ্রাম। ওই এলাকার মাঝ দিয়ে পাহাড়ি দেওছড়া (খাল) গিয়ে লাঘাটা নদীতে গিয়ে পড়েছে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে দেওছড়া খাল ও সংলগ্ন জলাশয়ে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটে। নানা কারণে খালটি ক্রমেই সরু ও পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। এতে শীত মৌসুমে দেওছড়া খালে আসছে না অতিথি পাখি।
ধূপাটিলা গ্রামের কৃষক শেরওয়ান আলী, সোহেল আহমদ, মুহিবুর রহমানের ভাষ্য, ‘দেওছড়ার ডেফাজান বিলে প্রত্যেক বছর শীতের সময়ে হাজার হাজার বালিহাঁস (অতিথি পাখি) আইতো। ভোরে পাখির কিচিরমিচির ডাকে আমরার ঘুম ভাঙতো। যুগ যুগ ধরিয়া ইখানো বালিহাঁস, বগুলা (বক)সহ নানা জাতের পাখি আইতো। প্রচুর দেশীয় মাছও পাওয়া যাইতো। বর্তমানে লতাপাতা জমিয়া ও ভরাট হইয়া এখন পানি-উ থাকে না। ছড়া ও বিলে এখন আর বালিহাঁসও আয় না’
সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ত্রিশ ফুট প্রস্থের পাহাড়ি দেওছড়া খাল এখন ৮ থেকে ১০ ফুট প্রস্থে পরিণত হয়েছে। এক সময় পাহাড়ি ছড়াটি ৫ থেকে ৭ ফুট পরিমাণ গভীর থাকলেও বর্তমানে ছড়ায় ২ থেকে ৩ ফুট গভীরতা রয়েছে। দেওছড়া খালসংলগ্ন প্রায় একশ একর জমিতে বিল ও জলাশয় রয়েছে। কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর পাহাড়ি এলাকা থেকে ছড়াটি উৎপত্তি হয়ে লাঘাটা নদীতে পড়েছে। মাছসহ নানা জলজ নানা প্রাণী এবং অতিথি পাখির আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত দেওছড়া বিল ও জলাশয়টি এখন অস্তিত্ব সংকটে। প্রায় পুরো জলাশয় ভরাট হয়ে ঝোপজঙ্গল ও লতাপাতায় ভরপুর।
দক্ষিণ ধূপাটিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুবায়েল আহমদ, কেছুলুটি গ্রামের সমাজকর্মী দুরুদ আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও অতিথি পাখির বিচরণস্থল ছিল দেওছড়া খাল ও বিল। ভরাট হওয়ায় পর্যাপ্ত পানির অভাবে এখন পাখি আসে না। এতে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিলীন হচ্ছে মৎস্য সম্পদও। দেওছড়া বিল ও জলাশয় খননে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী।
পরিবেশকর্মী নুরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, ছড়াটির জলাশয়ে বিপুল পরিমাণে দেশীয় মাছ এবং শীত মৌসুমে অতিথি পাখির অভয়াশ্রম তৈরি হয়। ভরাট হওয়ায় ছড়া ও জলাশয়ে এখন আর মাছ ও পাখি দেখা যাচ্ছে না। পানি না থাকায় চাষাবাদেও সমস্যা হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব