নরসিংদীতে চাঁদা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ৩
Published: 26th, January 2025 GMT
নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে চাঁদা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে গ্রামবাসীর সঙ্গে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে তিনজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন।
স্থানীয়রা জানান, চাঁদা চাওয়া নিযে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে টেঁটা, বাঁশ, রড, ইট, পাথর নিয়ে কয়েকশত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চেয়ারম্যান রাতুল হাসান ও সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হক পেছন থেকে নিজ নিজ পক্ষের লোকজনকে নির্দেশনা দেন। এতে আহত আলী আহমদ (২৩), আলমগীর হোসেন আলম (১৯) এবং অজ্ঞাত একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। জেলা সদর হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত আলমের বোন ইয়াসমিন বলেন, ‘‘বর্তমান এবং সাবেক চেয়ারম্যান চাঁদার জন্য দফায় দফায় বাড়িতে লোক পাঠায়। আমার বাবা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারধর করে ও হুমকি-ধমকি দেয়। এ ঘটনায় দুই মাস বাবা গ্রামে ছিলেন না। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে আমার ভাই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি আসলে রাসেল, রায়হান, রাজিবসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে শাসিয়ে যায়। আজ সকালে তাদের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন আমাদের উপর হামলা চালায় এবং আমার ভাইকে বুকে গুলি করে মেরে ফেলে।’’
তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে রায়পুরায় বাঁশগাড়ী এলাকায় চাঁদা তোলা নিয়ে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। তারা ঝগড়া করবে, তারা সংঘর্ষ করবে, আমরা কেন টাকা দেবো? এ জন্য আমার ভাইকে হারাতে হলো।’’
বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের মফিজ উদ্দিন, মোবারক মিয়া, ফজলে রাব্বিসহ কয়েকজন জানান, বছর পর বছর ধরে সাবেক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু টেঁটাযুদ্ধ লাগিয়ে রেখে বিভিন্নভাবে ফায়দা লুটে গিয়েছেন। বাঁশগাড়ী এলাকার মধ্যে এমন বাড়ি নেই, যে চাঁদা দিতে হয় না। রাজু চলে গেলেও তার লোকজন নিয়মিত বাড়িতে এসে চাঁদা দাবি করেন। যদি কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান, তবে নির্যাতন করেন। বিশেষ করে যারা বিদেশ ফেরত বা যাদের পরিবারের লোক বিদেশ থাকে; তাদের মোটা অংকের টাকা দিতে হয় টেঁটাযুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য।
তারা জানান, এখানে পুলিশ, প্রশাসন কেউ কিছু বলতে পারে না। কেউ কিছু বললে তাকে প্রাণ হারাতে হয়। না হলে এলাকা ছাড়া হতে হয়। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে, ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল হাসান ও সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানান, সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। তাদের একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।
ঢাকা/হৃদয়/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।
সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।
জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।
তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।
এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ রিকোভারীবৃন্দ।