রাজধানীর বারিধারায় বহুমুখী সংস্থা অ্যাসেন্ট গ্রুপ তাদের ফ্ল্যাগশিপ স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্প অ্যাসেন্ট হেলথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে।

অত্যাধুনিক এই প্রতিষ্ঠান দেশের ডায়াগনস্টিক এবং বহির্বিভাগ সেবায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখানে একই ছাদের নিচে মিলবে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা, ব্যক্তিগত কনসালটেশন এবং প্রিভেন্টিভ কেয়ারের মতো বিভিন্ন ও বিস্তৃত সব সেবা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসেন্ট গ্রুপ এবং অ্যাসেন্ট হেলথের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাসেন্ট গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) সৈয়দা মাদিহা মোরশেদ, অ্যাসেন্ট হেলথের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ডা.

আনোয়ারুল ইকবাল, চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ডা. সেলিনা লাইওয়ালা, অ্যাসেন্ট গ্রুপের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ও স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং ডিরেক্টর আমের আহমেদ এবং অ্যাসেন্ট হেলথের ল্যাব ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. ছাইদুর রহমান।

অ্যাসেন্ট হেলথের সিইও ডা. আনোয়ারুল ইকবাল দেশের নেতৃস্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। আইসিডিডিআর,বিতে তিনি ২০ বছর কাজ করেছেন।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘জনস্বাস্থ্য নিয়ে ৩১ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি রোগীর সেবায় সঠিক রোগ নির্ণয় ও সততার গুরুত্ব কতটা। অ্যাসেন্ট হেলথে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও প্রযুক্তির সঙ্গে অভিজ্ঞ ল্যাব ডিরেক্টর এবং রোগীকেন্দ্রিক পরিষেবার মাধ্যমে আমরা এই সততা, নৈতিকতা এবং নির্ভুলতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’’

অ্যাসেন্ট হেলথের চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. সেলিনা লাইওয়ালা তার বক্তব্যে সুনির্দিষ্ট ও সহানুভূতিশীল সেবার প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ ১৮ বছর জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

সেই অভিজ্ঞতার আলোকে ডা. সেলিনা লাইওয়ালা বলেন, “আমরা নির্ভুল রোগ নির্ণয়ের জন্য অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতিতে বিনিয়োগ করেছি এবং গড়ে তুলেছি অভিজ্ঞ, সহানুভূতিশীল ও সব বরেণ্য চিকিৎসকের টিম, যাতে অ্যাসেন্ট হেলথের রোগীরা সর্বোচ্চ মানের সেবা পায়। আমাদের প্রতিষ্ঠানে আপনি একজন অতিথি, যিনি সর্বোচ্চ সম্মান এবং সহানুভূতি পাবেন। কারণ আপনার সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।”

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে অ্যাসেন্ট হেলথ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার অভিজ্ঞতাকে নতুন মাত্রা দিতে প্রস্তুত। এটি রোগীদের ডায়াগনস্টিক এবং কনসালটেশনের প্রয়োজনে প্রাণবন্ত পরিবেশে ওয়ান-স্টপ সলিউশন দেবে এবং রোগীকেন্দ্রিক পরিষেবায় সারাদেশে নেতৃত্ব দেবে।

ঢাকা/হাসান/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে মৃত্যু ও সংক্রমণ দ্বিগুণ

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এখন প্রায় এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বা ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর নিচে। এমন অবস্থা চট্টগ্রাম, বরগুনা, কুমিল্লা, কক্সবাজার শহরেরও। এডিস মশার লার্ভা বা শূককীটের ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি হলো ‘ব্রুটো ইনডেক্স (বিআই)’। এই মানদণ্ডে লার্ভার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হওয়া মানে সেখানে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হবে।

মশা নিয়ে নিয়মিত জরিপ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তাঁর নেতৃত্বে সম্প্রতি গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।

দেশে এডিস মশা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এ মশার কামড়ে হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জুন মাসের তুলনায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জুলাইয়ে (৩০ জুলাই পর্যন্ত) দ্বিগুণের বেশি। আর সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।

সংক্রমণ ও মৃত্যু দুই-ই বেশি

গতকাল পর্যন্ত দেশে ২০ হাজার ৭০২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। শুধু জুন মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছিল ১৯ জনের। আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। জুনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৯৫১ জন। আর এ মাসে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪০৬ জন। চলতি মাসের সংক্রমণের এ সংখ্যা আগের ছয় মাসের বেশি। জুন থেকে জুলাই মাসে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ হাজার ২৯৬ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যত রোগী আক্রান্ত হয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার। বাকি ৭৯ শতাংশ রোগীই ঢাকার বাইরের। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৬ রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ মাসের শুরুতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হলেও প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি বেড়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার উত্তর সিটিতে রোগী ভর্তি কম। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৪২ জন রোগী উত্তরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন, আমরা তাঁদের প্রত্যেকের তথ্য নিয়ে দেখেছি, তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৮ জন এই সিটির বাসিন্দা। বাকিরা বাইরের।’

মৃত্যু বেশি গতবারের চেয়ে

এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ৪৬ জন মারা গেছেন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। অন্যরা দেশের অন্যত্র মারা গেছেন। গত বছর (২০২৪) এ সময় ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন ৫৬ জন।

ডেঙ্গুতে এবারের মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পেছনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাফিলতি, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়হীনতা, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সরঞ্জামের অভাব এবং ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারের অভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক হালিমুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব নেই। প্রতিটি হাসপাতালকে পরিচালন বাজেট থেকে ব্যয় করতে বলা হয়েছে। মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ রোগী আসছে অনেক দেরিতে। তখন আর চিকিৎসকের কিছু করার থাকে না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গুতে রোগী ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ সরকারের গতানুগতিক কাজ এবং অব্যবস্থাপনা। মানুষের কাছে ডেঙ্গু শনাক্তের সুযোগ পৌঁছায়নি। নীতিনির্ধারণী স্তরে এ নিয়ে কোনো ভাবনা আছে, এমন একেবারেই মনে হয় না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ