সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রথম আলোর নড়াইল প্রতিনিধি রাজু শেখকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) নড়াইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী।

জিডি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ জানুয়ারি সকালে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে অবস্থিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও কলেজের পূর্ব পাশের ফটকের পাশের একটি ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবার বক্তব্য নিয়ে সংবাদ পাঠান রাজু শেখ। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সংবাদটি প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়। এরপর রাত ১১টা ২৫ মিনিটে অপরিচিত মুঠোফোন নম্বর থেকে রাজু শেখকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ভাঙচুরের সংবাদ প্রকাশ করার কারণে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

সাংবাদিক রাজু শেখ বলেন, ‘‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ হুমকির শিকার হয়েছি। এই হুমকি শুধু মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাত নয়, বরং গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। আমি আশা করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনবে।’’

নড়াইল প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব মাহবুবুর রশীদ লাবলু বলেন, ‘‘প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে সে বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ করার সুযোগ আছে। সে সুযোগ কাজে না লাগিয়ে গণমাধ্যমকর্মীকে ব্যক্তিগত ভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া অপরাধ। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’’

নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘‘হুমকির ঘটনায় জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/শরিফুল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সরকার কোনো কঠিন বার্তা দিতে পারেনি

দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে জরুরি ছিল সমঝোতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা সুদূরপরাহত হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে; কিন্তু তা হয়নি।

সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের দিন ধার্য করার প্রাক্কালে সেই পুরোনো দিনের মতোই লকডাউনের নামে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে একধরনের শঙ্কা, সংশয় তৈরি হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ রকম অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। এটি হচ্ছে দুই ভাবে। একটি হলো সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে, আরেকটি হলো নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—এই দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের অদক্ষতা ও নিজেদের প্রতি আস্থাহীনতা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

আরও পড়ুনস্থিতিশীলতা বিঘ্নের পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়২৭ মিনিট আগে

এ রকম পরিস্থিতিতে দরকার ছিল, সরকার একটি কঠিন বার্তা দেবে, যাতে সাধারণ জনগণ আস্থা পাবে, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা ভয় পাবে। কিন্তু সে জায়গায় সরকার কঠিন কোনো বার্তা দিতে পারেনি। এ রকম হলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এই সুযোগে সমাজে যে দুর্বৃত্তরা রয়েছে, তারাও বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। হত্যা, খুন, গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা, বিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা নানা জায়গায় ঘটে চলেছে। বিগত দিনে স্বৈরাচারী সরকার যে রকম কোনো ঘটনা ঘটার পরপরই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না করে নিজেদের মতো করে বক্তব্য দিত, অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকেও একই রকমের বক্তব্য আসছে। এ ধরনের বক্তব্য প্রকারান্তরে অপরাধীদের অপরাধ করতে উৎসাহী করে তোলে।

এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করতে হয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে।

নূর খান: মানবাধিকারকর্মী

সম্পর্কিত নিবন্ধ