রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে যে পরিমাণ রিটার্ন জমার আশা করেছিল সরকার এখন পর্যন্ত তা না হওয়ায় আবারো সময় বাড়াতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকলেও ১৫ দিন বাড়ানোর  সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। সময় বাড়ালে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

এর আগে দুই দফায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ছিল ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এদিন পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতারা জরিমানা ছাড়া রিটার্ন দাখিল করার সময় ছিল। এছাড়া, কোম্পানি করদাতাদের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়কর দেওয়ার সময় রয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি আদেশ জারি করেছিল।  

এনবিআর জানায়, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার ৯৩৭টি। এর মধ্যে অনলাইনে জমা পড়েছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫২টি।  গত করবর্ষে আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছিল ৪৩ লাখের বেশি।

এ বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে অবস্থিত সকল সরকারি কর্মচারী, সারা দেশের সব তফশিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের, সারা দেশের সব মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং বহুজাতিক কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজ করতে এনবিআর গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল করার জন্য করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। 

বছরে আয় সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হলে আয়কর প্রযোজ্য হয়। ব্যাংক হিসাব খোলা, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারসহ বেশ কিছু কাজে এখন রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

রিটার্ন জমা দিলে ব্যাংকে সঞ্চয়ে সুদ বা মুনাফা এবং পুঁজিবাজারে লভ্যাংশের ওপর আয়কর ১৫ শতাংশের বদলে ১০ শতাংশ হয়।

ঢাকা/এনএফ/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আয়কর র ট র ন র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদের ই-রিটার্ন জমা দিতে বলেছে এনবিআর

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে তাঁদের ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন। গত আগস্টে সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে সব ব্যক্তি করদাতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানায় সংস্থাটি।

গত বছর নির্দিষ্ট এলাকার অধিক্ষেত্রের ব্যক্তি করদাতা, সারা দেশে ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। তাতে ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেন।

দেশে বর্তমানে ১ কোটি ১২ লাখের মতো কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাঁদের মধ্যে প্রতিবছর মাত্র ৪০ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল করেন।

এনবিআর জানায়, এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে চলতি বছর ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি কর্তৃক রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ছাড়া সব ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

চলতি ২০২৫-২৬ করবর্ষে যেসব করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন, তাঁরাও চাইলে অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। অন্যদিকে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধনসংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে না পারলে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে আবেদন করলে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে কাগুজে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এই সময়সীমা ৩১ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করদাতার পক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দিতে পারছেন। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও তাঁদের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, ই-মেইল ইত্যাদি তথ্য দিয়ে ই-মেইল করলে ই-রিটার্নের নিবন্ধন লিংক পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতারা ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করে সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। কোনো ধরনের কাগজপত্র বা দলিল আপলোড না করেই করদাতারা তাঁদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে ঝামেলাহীনভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। ই-রিটার্ন দাখিলের পর তাৎক্ষণিকভাবে জমা স্লিপ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আয়কর সনদও প্রিন্ট করে নিতে পারছেন করদাতারা।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ই-রিটার্ন জমা সহজ করার জন্য গত বছরের মতো এবারও করদাতাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা দিতে একটি কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। আবার ওয়েবসাইটে ই-রিটার্নসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানালেও তার সমাধান পাচ্ছেন করদাতারা। কোনো করদাতা সশরীর নিজ নিজ কর অঞ্চলে গিয়েও ই-রিটার্ন জমা দেওয়াসংক্রান্ত সেবা নিতে পারছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদের ই-রিটার্ন জমা দিতে বলেছে এনবিআর