যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা দুর্ভাগ্যজনক। এই নির্মমতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয়।
 
শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কুমিল্লা জেলাধীন সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামকে সাদা পোশাকধারী লোকেরা বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে তাকে হত্যা করে। তৌহিদুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। ড.

ইউনূসের (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার হলো-গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা থেকে জাতিকে মুক্তি দেয়া। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ভীতি থেকে দেশবাসীকে নিরাপদ রাখা। কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে আবারও দেশে নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে আসবে। 

মানুষ এক অজানা আশঙ্কায় দিনাতিপাত করবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জনমনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এহেন বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় দেশবাসী হতবাক হয়েছে। সরকার ও প্রশাসনে আওয়ামী দোসরদের ঘাপটি মেরে থেকে রক্তাক্ত ঘটনা ঘটানো হচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে গভীর অনুসন্ধান জরুরি।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোন সরকারি বাহিনীই আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। অপরাধ সংঘটনকারী যতই শক্তিশালী হোক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া আইনের শাসনের অন্যতম শর্ত। কিন্তু তাকে কখনোই বিচারবহির্ভূতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করার কোন অধিকার সরকারী বাহিনীগুলোর নেই। বেআইনি হত্যা করে কখনোই সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা যায় না, এতে আইনের শাসনকে চরমভাবে অবজ্ঞা করা হয় এবং দেশকে ঠেলে দেয়া হয় আদিম অন্ধকারের দিকে।

বিএনপি মহাসচিব তৌহিদুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে নিহতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন করেন করেন মির্জা ফখরুল।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ব এনপ ত হ দ ল ইসল ম সরক র র আইন র র ঘটন আওয় ম ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভারতকে থামান’, জাতিসংঘকে শাহবাজ শরিফ

ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে নয়াদিল্লিকে দায়িত্বশীল আচরণ ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে অনুরোধ জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ জোর দিয়ে বলেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু অববাহিকার পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা পাকিস্তানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে এক ফোনালাপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। দুই নেতার এ আলাপে দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের ওপর আলোকপাত করা হয়।

গুতেরেসের সঙ্গে আলাপে শাহবাজ বলেন, ভারতের কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণের জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা পূর্ণ শক্তি দিয়ে রক্ষা করবে।

ভারতের কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণের জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা পূর্ণ শক্তি দিয়ে রক্ষা করবে।শাহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত মঙ্গলবার থেকে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। ঘটনার পরপরই কোনো প্রমাণ ছাড়াই ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানায়। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানের বড় ত্যাগের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

ভারতের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে শাহবাজ বলেন, পেহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তানকে যুক্ত করার যেকোনো চেষ্টা অগ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি তিনি ওই ঘটনায় নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

‘সন্ত্রাসবাদ’-এর অজুহাতে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অবমূল্যায়ন করার ‘ভারতীয় চেষ্টায়’ গভীর উদ্বেগ জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসের’ বিষয়ে তুলে ধরেন তিনি।

‘সন্ত্রাসবাদ’-এর অজুহাতে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অবমূল্যায়ন করার ‘ভারতীয় চেষ্টায়’ গভীর উদ্বেগ জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসের’ বিষয়ে তুলে ধরেন তিনি।

গুতেরেসকে শাহবাজ বলেন, সিন্ধু অববাহিকার পানিকে অস্ত্র বানানোর ভারতের প্রয়াস গ্রহণযোগ্য নয়। এ অববাহিকার পানিকে ২৪ কোটি পাকিস্তানির জীবনীশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণ দেখালে, এর জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগ করবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি ভারতকে সংযত আচরণ করার পরামর্শ দেওয়ার ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবসমূহ অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার ন্যায়সংগত সমাধানে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি দায়িত্বশীল সদস্য ও নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা ত্বরান্বিত করায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মহাসচিব গুতেরেস ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন, যা দুঃখজনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় নিজের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।স্টিফেন ডুজারিক, জাতিসংঘের মুখপাত্র

এদিকে জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেন, মহাসচিব গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শংকরের সঙ্গে কথা বলেছেন। এসব আলাপে গুতেরেস আইনি পন্থায় ন্যায়বিচার অনুসরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

আরও পড়ুনসিমলা চুক্তি স্থগিত করার পাকিস্তানের হুমকি কি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল২০ ঘণ্টা আগে

জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, মহাসচিব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন, যা দুঃখজনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় নিজের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।

আরও পড়ুন৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে ভারতের হামলার পরিকল্পনার গোয়েন্দা তথ্য আছে৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনভারত-পাকিস্তানের প্রতি উত্তেজনা না বাড়ানোর আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ভারতকে থামান’, জাতিসংঘকে শাহবাজ শরিফ
  • অভিনেতার রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবার বলছে খুন
  • অভিনেতার রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবার বলছেন খুন