ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন– এই তিন দাবিকে সামনে নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছিলাম। শুধু নেতা আর দলের পরিবর্তন হলেই দেশে শান্তি আসবে না।  প্রশাসনকে এখনও ঢেলে সাজানো হয়নি। আমরা শুধু চেহারার পরিবর্তন করি, হাত বদল করি। চাঁদাবাজ পরিবর্তন করি।

তিনি বলেন, চরিত্রবান লোক চেয়ারে না বসা পর্যন্ত এদেশে কোনো নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটবে না। বুধবার সন্ধ্যায় কুমারখালী পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ গঠনে উত্তম পদ্ধতি পিআর নির্বাচন। সংখ্যানুপাতিক হারে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সকল আদর্শের মানুষ সংসদে যেতে পারবে। তাহলে সর্বজনীন সংসদ হবে। রাস্তায় হরতাল করতে হবে না। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষ ব্যবসা করতে পারছে না। মা-বোন ইজ্জত নিয়ে ঘরে থাকতে পারছে না। ‘বিএনপির কী গুণ? ৯ মাসে দেড়শ খুন; চাঁদা তোলে পল্টনে, চলে যায় লন্ডনে’। এটি দেখার জন্য কি আমরা আন্দোলন করেছিলাম। আমরা চাই এদেশ শান্ত হোক। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান পরিবেশে সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, স্থানীয় নির্বাচন আগে করে দেখা উচিত। যদি দেখি স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে; তাহলে মনে করব জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। 

কুমারখালী পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় গণসমাবেশের আয়োজন করে কুমারখালী ও খোকসা উপজেলা ইসলামী আন্দোলন। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সৈয়দ ফয়জুল করীম। এতে সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী ও খোকসা উপজেলার সভাপতি আনোয়ার খাঁন।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বরের গণহত্যাসহ উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার জুরাইন রেলগেট–সংলগ্ন বিক্রমপুর প্লাজা চত্বরে এক গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির এ কথা বলেন।

পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং অপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কদমতলী-শ্যামপুর থানা।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির রেজাউল করীম বলেন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ এখন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘নতুনভাবে আবার এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষকে আপনি কী মেসেজ দিতে চান? আবার সেই স্বৈরাচার আসবে? আবার সেই চাঁদাবাজ আসবে? আবার সেই মায়ের কোলগুলো খালি হবে? দেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে? আয়নাঘর তৈরি হবে? পিলখানা হত্যা হবে?’ তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের মানুষ আমরা আর দেখতে চাই না। পরিবর্তন করতে হবে, সংস্কার করতে হবে।’

বিভিন্ন মৌলিক সংস্কারে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার (দ্বিমত পোষণ করার) বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, সরকার গঠনের পরে দুই বছরের ভেতরে সংস্কার করার কথা বলা হচ্ছে। অন্ধকে হাইকোর্ট দেখিয়ে লাভ নেই। হাইকোর্ট এখন সবাই চেনে।

একটি রাজনৈতিক দল জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা এখনো বুঝতে পারেনি উল্লেখ করে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দলটির কলঙ্ক রচিত হয়েছে। সামনে নির্বাচনেও বাংলাদেশের মানুষ একই কলঙ্ক রচনা করবে। বাংলাদেশের ভেতরে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।

সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি করে দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারছে না।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সবাই বলেছে, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। একটি বড় দল বলেছে সংবিধানের সংশোধন, আইনি ভিত্তি দেওয়ার এই কাজগুলো এখন হবে না। নির্বাচনের পরে যে সংসদ আসবে, তারাই এসে নাকি সেই কাজগুলো করবে। তাহলে কেন জুলাই সনদের জন্য দুই মাস সময় নষ্ট করা হলো? এর পেছনে নিশ্চয়ই অসৎ উদ্দেশ্য আছে।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, পিআর পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ দুটিতেই পিআর মানতে হবে, তা না হলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দেশবাসীকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী। সঞ্চালনা করেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কে এম শরীয়াতুল্লাহ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাজ্জাক। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে