হেলমেট পরে মোটরসাইকেলে এসে গুলি, ‘ব্যাগ ভর্তি’ টাকা-স্বর্ণ ছিনতাইচেষ্টা
Published: 2nd, February 2025 GMT
ঝালকাঠির রাজাপুরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে সুপ্তি জুয়েলার্সের মালিক গোপাল কর্মকারসহ দুজনকে কুপিয়ে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা সদরের দক্ষিণ মাথা এলাকার কামার পট্টিতে এ ঘটনা ঘটে।
গোপাল কর্মকার রাজাপুর উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।
ভুক্তভোগী গোপাল কর্মকার জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে মোটরসাইকেল করে বাসায় ফিরছিলেন। তার সঙ্গে রতন নামে আত্মীয় ছিলেন। তারা সদরের বাজারের দক্ষিণ মাথা এলাকার কামার পট্টিতে পৌঁছালে হেলমেট ও কালো জ্যাকেট পরা কয়েকজন যুবক তাদের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। তাদের বাধা দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান গোপাল ও রতন। তাদের গায়ে মোটা সোয়েটার থাকায় আঘাত গুরুতর হয়নি। আশপাশের লোকজন চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে সঙ্গে থাকা দুটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যাতে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল। দ্রুত লোকজন চলে আসায় পকেটে থাকা টাকা ও স্বর্ণ ভর্তি ব্যাগ নিতে পারেনি।
জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপজেলা সভাপতি সঞ্জয় কর্মকার জানান, গোপালের ওপরে আগেও একবার আক্রমণ হয়েছিল। এ ঘটনায় উপজেলার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্কে বিরাজ করছে।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিটিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।