বিনা খরচে আবাদ, মুনাফায় খুশি শজিনা চাষিরা
Published: 3rd, February 2025 GMT
খুলনার ডুমুরিয়ায় গত বছরের মতো এবারও শজিনার ভালো ফলন হয়েছে। পতিত এবং লবণাক্ত এলাকায় বিনা খরচে শজিনা আবাদ করে ভালো মুনাফা করছেন কৃষক। এতে শজিনা চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক আকারে শজিনা আবাদ হচ্ছে। এতে ‘শজনের উপজেলা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ডুমুরিয়া।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর শজিনা বিক্রি করে চাষিরা ১১ কোটি টাকা আয় করেছে। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষক-কৃষানিরা। এ কারণে এবার আরও বেশি জমিতে শজিনা আবাদ করেছেন তারা। চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে শজিনা চাষ হয়েছে। ব্যাপক ফলনও হয়েছে। এতে এবার শজনে উৎপাদন এক হাজার টন ছাড়িয়ে যাবে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা। বর্তমানে উপজেলার ১২৬টি গ্রামে ব্যাপক আকারে শজিনা আবাদ করা হচ্ছে।
শজিনা চাষিদের ভাষ্য, শজিনা আবাদে সার, কীটনাশক ও সেচ খরচ নেই। অনাবাদি জমি এবং লবণাক্ত জমিতেও শজিনা চাষ করা যায়। শজিনা গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে দিলেই হয়ে যায় গাছ। ডাল রোপণের ১১ মাস পর শজিনা পাওয়া যায়। শীতের মাঝামাঝি গাছে ফুল আসে, শীত শেষ না হতেই শজিনা খাওয়ার উপযোগী হয়। প্রথম দিকে শজিনার কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারেন কৃষকরা। গাছে এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত শজিনার ফলন পাওয়া যায়।
কৃষিতে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চাষি উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের নবদ্বীপ মণ্ডল বলেন, তাদের গ্রামের পুরুষরা মাঠে কাজ করেন। আর নারীরা সংসারের কাজ সেরে বাড়ির আঙিনায় বা ফাঁকা অনাবাদি জায়গায় শজিনার ডাল রোপণ করে যত্ন করেন। এ ছাড়া লবণাক্ত মাটিতেও শজিনা চাষে কোনো প্রভাব পড়ে না। শজিনার ভালো ফলন ও দামে খুশি কৃষক-কৃষানিরা।
কুলবাড়িয়া গ্রামের নুর মুহাম্মদ মোড়লের ভাষ্য, গত বছর তিনি ১০টি গাছ থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকার শজিনা বিক্রি করেছিলেন। এ বছর ১৫ হাজার টাকার শজিনা বিক্রির আশা করছেন তিনি।
রানাই গ্রামের কৃষক মো.
শরাফপুর গ্রামের গৃহবধূ কাজলী মণ্ডল বলেন, শজিনা চাষে কোনো খরচ হয় না। আর কৃষকের বাড়ি থেকে ফড়িয়ারা নগদ টাকা দিয়ে শজিনা কিনে নিয়ে যায়। কোনো পরিবহন খরচ লাগে না। শজিনা বিক্রি করে প্রায় পুরোটাই লাভ পাওয়া যায়।
খর্নিয়া গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মনিমহন মল্লিক শ্রমিকের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শজিনা ডাটা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেন। তিনি বলেন, নিরাপদ সবজি হিসেবে স্থানীয় বাজার ও শহরে শজিনার কদর অনেক। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মুনাফাও ভালো হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, ব্যাপক পরিসরে শজিনা আবাদের কারণে এখন ‘শজিনা উপজেলা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ডুমুরিয়া। আগের বাড়ির উঠান ও অনাবাদি জমিতে শজিনার আবাদ হতো। দাম ভালো পাওয়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবেও উৎপাদন হচ্ছে। শজিনা চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে প্রতি বছর বিনামূল্যে চারা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপজ ল র গত বছর করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল
১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।
১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।
১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।
মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।
বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।
আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।
কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।
ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি