কুষ্টিয়ায় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে হানিফের বাড়ি
Published: 5th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হচ্ছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ি। আজ বুধবার রাত ১০টার দিকে শহরের পিটিআই সড়কে তিনতলা বাড়িটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে ভাঙা শুরু হয়।
এর আগে গত ৪ আগস্ট ও ৫ আগস্ট এই বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। চলে লুটপাট। এই ঘটনার পর বাড়িটিতে ইট ছাড়া কিছুই ছিল না। তবে ৫ আগস্ট থেকে হানিফ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন। জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি ভারতে পালিয়ে আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, একটি বুলডোজার নিয়ে প্রথমে বাড়ির প্রধান ফটক ও সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্র-জনতা স্লোগান দিতে থাকে ‘স্বৈরাচারের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’। এ সময় বাড়ির সামনে অনেকেই ভিড় করে।
এর আগে উপজেলা মোড় থেকে একটি মশাল মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতা হানিফের বাড়ির সামনে আসে। রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হানিফের বাড়িতে ভাঙচুর চালান বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের শহরের কদমতলা সাততলা বাড়ির দিকে যায় মিছিল। সেখানে রাত পৌনে ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় ওই বাড়িতে ভাঙচুর চালাচ্ছেন ছাত্র-জনতা।
অনেকে স্লোগানে বলতে দেখা যায়, কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় হানিফের চাচাতো ভাই ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের সাততলা ভাঙা বাড়িতেও বুলডোজার দিয়ে আবার ভাঙা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।