যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে চায়ের দোকানে দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আটজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে উচ্চ রক্তচাপে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমজাদ হোসেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যরা ক্যাম্পাসে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত দুইটার পর ক্যাম্পাস শান্ত হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমজাদ হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতেই সব সহকারী প্রক্টর একসঙ্গে হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মিছিল-মিটিং, মানববন্ধন-সমাবেশ করা যাবে না। করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় আজ শনিবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে একটি চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেমিক্যাল প্রকৌশলী বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকা শাহানীর সঙ্গে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপনের ধাক্কা লাগে। স্বপন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর সাদেকার বন্ধুরা সিএসই বিভাগ নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। তখন সিএসইর কয়েকজন শিক্ষার্থী সাদেকার বন্ধু ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিব আহমেদকে ডেকে নেন। তখন সাদেকা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মীদের কল করে ঘটনাস্থলে জড়ো করেন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন উভয় পক্ষকে থামাতে সেখানে হাজির হন প্রক্টর আমজাদ হোসেন। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে প্রক্টর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত উভয় পক্ষের আটজনের মধ্যে চারজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে সাদেকা শাহানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ও আমার ব্যাচমেট হাবিবসহ কয়েকজন চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। তখন সিএসই বিভাগের স্বপনের সঙ্গে আমার ধাক্কা লাগে। আমি বিরক্ত হলে স্বপন ও তাঁর এক বন্ধু সরি বলে। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সিএসইর কয়েকজন শিক্ষার্থী হাবিবকে ডাকে। এটা দেখে আমি আমার বন্ধু ও ছোট ভাইদের ডেকে জড়ো করি। এরপর সংঘর্ষ শুরু হয়।’

এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইকবাল কবির ও সিএসই বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মো.

গালিবকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অধ্যাপক গালিবের বরখাস্ত আদেশকে অবৈধ দাবি করে গতকাল দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ধারণা, গালিবের এই বরখাস্তের পেছনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইন্ধন রয়েছে। এ জন্য সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধীদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এর মধ্যে রাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকা শাহানী ও হাবিব আহমেদের সঙ্গে ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি সেই দ্বন্দ্ব সংঘর্ষে রূপ দিয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, ‘আমার ধারণা, এই সংঘর্ষের নেপথ্যে গালিবের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি থাকতে পারে। তা না হলে শুধু চায়ের দোকানে দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তুচ্ছ কথা-কাটাকাটির ঘটনায় ক্যাম্পাসে এত বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার কথা নয়।’

এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য জানার জন্য যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স এসই ব ভ গ র স ঘর ষ র বরখ স ত স বপন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’ 

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • ১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
  • নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
  • টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
  • মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা