গোপালগঞ্জে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভা চলার সময় এক ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

তাঁকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

আহত ব্যক্তির নাম শ্যামল মণ্ডল। তিনি সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের হাটবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তিনি গোপালগঞ্জে বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার (ডগলাস প্রকল্প) কোষাধ্যক্ষ। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শলোমন অপূর্ব বাড়ৈ বলেন, গোপালগঞ্জের বেদগ্রামে বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার সামনে ও ভেতরে জায়গা দখল করার জন্য দীর্ঘদিন পাঁয়তারা করছেন বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি এন্ড্রু বিশ্বাস। আজ কার্যনির্বাহী কমিটির নির্ধারিত সভা ডাকা হয়েছিল। শুরুর কিছু সময় পর এন্ড্রু সভা বানচাল করার জন্য ৪০-৫০ জন লোক নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে উপস্থিত সদস্যদের কয়েকজনকে পেটানো হয়। আতঙ্কে অনেক সদস্য দৌড়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় সংস্থাটির কোষাধ্যক্ষ শ্যামলকে কক্ষে আটকে মারধরের একপর্যায়ে তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এতে গুরুতর দগ্ধ হন তিনি।

সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্য বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার এন্ড্রু বিশ্বাস তাঁর ভাগনেদের সঙ্গে নিয়ে খুলনায় গিয়ে আমাকে আজকের সভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য হুমকি দেন এবং আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। আমি গোপালগঞ্জে এলে দেখে নেবে বলেও হুমকি দিয়ে আসেন। তাঁর উদ্দেশ্য গোপালগঞ্জে বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার জায়গাটুকু দখল করে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। আজ এন্ড্রু বিশ্বাসের নেতৃত্বে প্রভাস বাড়ৈ, দিলীপ বাড়ৈ, আইজ্যাক বাড়ৈ, জুয়েল বাড়ৈ, মিকাইল বাড়ৈ, লিটন, সুকলাল মজুমদারসহ ৪০-৫০ জন লোক নিয়ে শ্যামলের ওপর হামলা হয়।’

এ বিষয়ে এন্ড্রু বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়।’ সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাঁর বড় ভাই হিসেবে একটা থাপ্পড় মেরেছি। তবে আজ আমার কোনো লোক হামলা করেনি। কারা তাঁদের ওপর হামলা করেছে বা পুড়িয়েছে সেসব আমার জানা নেই।’

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কর্মকর্তা মো.

আবদুল্লাহ রাজিব বলেন, আজ দুপুরে শ্যামল মণ্ডলের বুক, পেট, দুই হাতের সব জায়গায় পুড়ে গেছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির সাজেদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ, জনতার চাপে ‘মাফ চেয়ে’ এলাকা ছাড়ালেন ‘এমপি প্রার্থী’

ফরিদপুরে সদরপুর উপজেলায় মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন রায়হান জামিল নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু বিতরণের জন্য যে পরিমাণ মাছ তিনি এনেছিলেন, তার থেকে লোকসংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হয়। সবাইকে মাছ দিতে না পেরে জনতার বিক্ষোভের মুখে কোনোরকমে এলাকা ছাড়েন তিনি।

আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। তিনি ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর ৪ আসনের একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। এরই অংশ হিসেবে ‘জনগণের মন জয় করার জন্য’ তিনি ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রায়হান জামিল ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ পরিচয় দিয়ে সপ্তাহখানেক আগে সদরপুরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সাঁটান। তাতে তিনি লেখেন, ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেবেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিশ্ব জাকের মঞ্জিল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই ইলিশ দেওয়ার কথা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার সকাল থেকে শত শত মানুষ জাকের মঞ্জিল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। বিতরণ শুরুর একপর্যায় মাছ ফুরিয়ে যায়। তখন মাছ নিতে না পারা লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে রায়হান জামিল পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন।

‘স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী’ পরিচয়ে ১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ করতে যাওয়া রায়হান জামিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ, জনতার চাপে ‘মাফ চেয়ে’ এলাকা ছাড়ালেন ‘এমপি প্রার্থী’
  • পুকুরে প্রাণ গেল চাচাত ভাই-বোনের