সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তরায় হয়, তাহলে সেই প্রস্তাবে বাধা দেবে বিএনপি। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে প্রশ্ন করেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এর আগে বলেছেন সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা খর্ব হবে। এ বিষয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে কি না? এর জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এটা তো তাদের ব্যাপার, তারা বলবে। আমরাও যদি মনে করি সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তরায়, ওটা নির্বাচন কমিশন কেন, আমরাও বাধা দেব।’

বৈঠকে ইসির পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাসুদ, তহমিদা আহমদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো.

সানাউল্লাহ। আরও ছিলেন ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ।

বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন নজরুল ইসলাম খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির আরও দুজন সদস্য সেলিমা রহমান ও সালাহ উদ্দিন আহমদ। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ করে বুঝতে পেরেছেন আগামী মে বা জুন মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশন পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবে। সে হিসেবে দ্রুতই জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব।

কমিশনের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নির্বাচন ছাড়া আর আলোচনার বিষয় থাকে না। তারা (নির্বাচন কমিশন) এই মুহূর্তে কী কার্যক্রম, জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে প্রস্তুতি কী, এসব বিষয় মতবিনিময়ে এসেছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, হালনাগাদ ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আগামী মে মাস, জুন মাসের মধ্যে ইসি পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবে। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন তাদের নেই। কারণ, দেশের প্রচলিত সংবিধান আইন হলে, একটা সরকার পদত্যাগ করলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু এখন তো ওই আইনে দেশ চলছে না। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকারের তরফ থেকে অনুরোধ হতে হবে এবং তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। তবে এতটুকু বোঝা গেছে যদি মে মাস বা জুন মাসের মধ্যে পূর্ণ প্রস্তুতি তাদের থাকে, তাহলে খুব দ্রুতই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।

কবে নাগাদ নির্বাচন হবে, এমন বার্তা পেয়েছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আগেও বলেছি, এই ঘোষণা তো ওনারা করতে পারেন না। কারণ, এখন সংবিধানের স্বাভাবিক যে নিয়ম, সে অনুযায়ী নির্বাচন হচ্ছে না।’
আপনারা কোনো প্রস্তাব দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, না। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দায়িত্ব এখন সরকারের। তারপর শিডিউল (তফসিল) ঘোষণা নির্বাচন কমিশন করবে। সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটা আলোচনা আছে। সেখানে এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রতিনিধি

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য জার্মানিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধি দল। সোমবার এই বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা জ্যারেড কুশনার ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয়দের সাথে আলোচনার জন্য জার্মানি সফর করছেন।

মার্কিন শান্তি প্রস্তাব নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সাথে আলোচনার নেতৃত্বদানকারী উইটকফকে পাঠানোর সিদ্ধান্তটি একটি সংকেত বলে মনে হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ওয়াশিংটন অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখছে। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, ট্রাম্প যদি মনে করেন যে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে তবেই কেবল একজন কর্মকর্তাকে আলোচনায় পাঠাবেন।

 বৈঠক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জার্মান সরকারের একটি সূত্র বলেছেন, “ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা সপ্তাহান্তে বার্লিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।”

সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর মের্জ বার্লিনে জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলনের আতিথেয়তা করছেন, যা ইউরোপ জুড়ে মিত্রদের কাছ থেকে ইউক্রেনীয় নেতার প্রতি সমর্থনের ধারাবাহিক প্রকাশ্য প্রদর্শনের সর্বশেষ ঘটনা। কারণ প্রাথমিকভাবে মস্কোর প্রধান দাবিগুলিকে সমর্থন করে এমন একটি শান্তি পরিকল্পনায় স্বাক্ষর করার জন্য কিয়েভ ওয়াশিংটনের চাপের মুখে রয়েছে।

ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কিন প্রস্তাবগুলোকে পরিমার্জন করার জন্য কাজ করছে। আগের প্রস্তাবে কিয়েভকে আরো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার, ন্যাটোতে যোগদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করার এবং তার সশস্ত্র বাহিনীর সীমাবদ্ধতা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ