খুলনায় প্রবাস ফেরত মো. সোহেল রানা (৩২) নামে এক যুবকের হাত-পা কাটা ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা সদর থানাধীন বুড়ো মৌলভীর দরগা মেইন রোডের জনৈক আশরাফুলের ভাড়াটিয়া বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমিপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

নিহত সোহেল রানা বরিশালের বন্দর থানাধীন চড়াইচা গ্রামের মৃত আশরাফ শেখের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফেরেন।

আরো পড়ুন:

গাছে ঝুলছিল প্রতিবন্ধী নারীর বিবস্ত্র মরদেহ 

পরিবারের আবেদনে শহীদ ইয়ামিনের মরদেহ উত্তোলন স্থগিত

কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, “নিহত সোহেল রানার লাশ যে ঘরে পাওয়া গেছে ওই ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। তার মৃতদেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে একটি কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। খাটের ওপর একটি চেয়ারও ছিল। এছাড়া তার হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান কাটা অবস্থায় ছিল। এমনকি রক্তমাখা ছুরিও পাশে পড়ে ছিল।” 

তিনি আরো বলেন, “পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন- সোহেল রানা বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা দিয়ে তার বড় ভাই রূপসা সেতু এলাকায় জমি কিনেছিলেন। ওই জমি  নিয়ে সমস্যা থাকায় দখলে যেতে পারছিলেন না তিনি। এ বিষয়ে তিনি মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছিলেন।” 

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ