সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান, পরিসংখ্যান সিভিল সার্ভিস গঠনের দাবি
Published: 11th, February 2025 GMT
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে পরিসংখ্যান ক্যাডারের কর্মকর্তারা বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য একটি পেশাদারি পরিসংখ্যান সিভিল সার্ভিস গঠনের দাবি জানান।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এক প্রতিবাদলিপিতে এই দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলো হচ্ছে-
• পেশাদার পরিসংখ্যান ব্যবস্থার স্বার্থে বিদ্যমান বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সার্ভিস হিসেবে পুনর্গঠন করতে হবে;
• জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা সংস্কার ও অধিকতর জনমুখী করার লক্ষ্যে পৃথক ‘জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে;
• রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ অপসারণ করে জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিতকল্পে মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে জাতীয় সংসদের কাছে দায়বদ্ধ স্বাধীন সংস্থা হিসেবে ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’-কে পুনর্গঠন করতে হবে।
প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, বিদ্যমান সিভিল সার্ভিসগুলো পুনর্বিন্যাস করে বিভিন্ন সার্ভিস ও এর কাঠামো পুনর্গঠনের প্রস্তাব করা হলেও একমাত্র বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারকে পুনর্গঠিত সার্ভিসগুলোর প্রস্তাবে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করা হয়েছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ পেশাভিত্তিক এ ক্যাডার সার্ভিসকে ‘অস্তিত্বহীন’ করার মতো অদূরদর্শী সুপারিশ বলে মনে করে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। এজন্য কমিশনের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে অ্যাসোসিয়েশন।
এতে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি দাখিল করা প্রতিবেদনে বিদ্যমান সিভিল সার্ভিসগুলো পুনর্বিন্যাস করে বিভিন্ন সার্ভিস ও এর কাঠামো পুনর্গঠনের প্রস্তাব করা হলেও একমাত্র বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারকে পুনর্গঠিত সার্ভিসগুলোর প্রস্তাবে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করা হয়েছে। দাখিল করা সংস্কার প্রস্তাবে ১৯৮০ সালে সৃজিত গুরুত্বপূর্ণ পেশাভিত্তিক এ ক্যাডার সার্ভিসকে ‘অস্তিত্বহীন’ করার মতো অদূরদর্শী সুপারিশ আমাদের অত্যন্ত বিস্মিত ও ব্যথিত করেছে।
সব বৈষম্য নিরসন ও গতিশীল জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টা এবং ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে এ সুপারিশ সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক বলেও মনে করে অ্যাসোসিয়েশন।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, মূলত সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মাধ্যমে বিবিএস-এ নিযুক্ত মেধাবী পরিসংখ্যানবিদদের সমন্বয়ে গঠিত এ সার্ভিসকে অবমূল্যায়ন করে আরেকটি নতুন বৈষম্য চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এ সুপারিশ করার আগে মূল স্টেকহোল্ডার হিসেবে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন বা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে তা সমাধানে কোনো প্রকার মতামত নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেনি।’
‘এমনকি বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে লিখিত কতিপয় সংস্কার প্রস্তাব কমিশনে পাঠানো হলেও তা আমলে না নিয়ে একতরফাভাবে একটি ঐতিহ্যবাহী সিভিল সার্ভিসকে অস্তিত্বহীন করার মতো সুপারিশ করে একটি দায়সারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়।’
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা, বাংলাদেশে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারকে প্রস্তাবিত সার্ভিসগুলোর বাইরে রাখার অপকৌশল প্রকারান্তে প্রমাণনির্ভর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায়। কমিশনের এ সুপারিশ কতখানি পেশাদারি জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কেননা, দায়সারা ও অদূরদর্শী এ প্রতিবেদনের ষষ্ঠ অধ্যায়ের পৃষ্ঠা নম্বর ১৩ এর ৬.
সেখানে বলা হয়, তথ্য-উপাত্ত নির্ভর বিশ্বব্যবস্থায় বিভিন্ন রাষ্ট্র যেখানে উত্তরোত্তর পরিসংখ্যান সার্ভিসকে আধুনিক ও শক্তিশালী করছে, সেখানে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন থেকে পরিসংখ্যান ক্যাডারকে পুনর্গঠিত সার্ভিসগুলোতে অন্তর্ভুক্ত না করার প্রহসনমূলক প্রস্তাব উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণে জুলাই বিল্পবের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বর্তমানে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার সার্ভিসে কর্মরত জনবলের ক্যারিয়ার প্ল্যান ও সুস্পষ্ট ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা প্রদান না করে এ কমিশন দায়সারাভাবে প্রতিবেদন দাখিল করেছে, যা রাষ্ট্র থেকে প্রদত্ত দায়িত্ব পালনে অবহেলার বহিঃপ্রকাশ।
এ ধরনের প্রস্তাব জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা এবং বর্তমান সরকারকে বিব্রত করার অপপ্রয়াস বলে মনে করে অ্যাসোসিয়েশন।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এ অবস্থায় বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা একাত্মভাবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন থেকে দাখিল করা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছে।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, আমরা চাই শক্তিশালী বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সার্ভিস গঠনের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য, সময়োপযোগী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। পরিসংখ্যান সার্ভিস তথা পেশাভিত্তিক জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থাকে অস্তিত্বহীন করার এ হীন চেষ্টার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট প্রত্যাহার করার জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় পর স খ য ন ব যবস থ পর স খ য ন স র ভ স ল দ শ পর স খ য ন পর স খ য ন ক দ খ ল কর ব স এস গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
দরজার ক্যামেরায় ‘এলিয়েন’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক নারীর বাড়ির দরজায় লাগানো ক্যামেরায় (ডোরবেল ক্যামেরা) ধরা পড়েছে এক ‘রহস্যময়’ অবয়ব, যা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে নানা জল্পনা।
ঘটনাটি ঘটেছে ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পটন এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা জেসিকা ওর্তিজ তাঁর বাড়ির বাইরের দিকের দরজায় লাগানো ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওর একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। এতে দেখা যায়, রাতে বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি ছায়ামূর্তি।
ভিডিও দেখে তাঁর ছেলে তাঁরই মতো হতভম্ব হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন এই নারী। সংবাদমাধ্যম এনবিসি লস অ্যাঞ্জেলেসকে ওর্তিজ বলেন, ‘আমার ছেলে বিছানা থেকে উঠে পরপর তিনবার ভিডিওটা চালায়। শেষবার দেখে বলে ওঠে, “মা, এটা একটা এলিয়েন। পুলিশে ফোন করো।”’ জবাবে তিনি বলেন, ‘এলিয়েনের জন্য পুলিশ ডাকব? লোকে তো আমাকে পাগল ভাববে!’
ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি ১০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমেও ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওর নিচে মন্তব্যের ঘরে কেউ কেউ বলেছেন, এটি এলিয়েন বা অন্য কোনো রহস্যময় প্রাণী হতে পারে। কেউ আবার এমন ধারণাও প্রকাশ করেছেন, এটি হয়তো কোনো মানুষ, যাঁর মাথায় টুপি ছিল বা তিনি হালকা রঙের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। দূর থেকে ক্যামেরায় তা এলিয়েনসদৃশ ছায়া তৈরি করেছে।
তবে এ পর্যন্ত কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে এই ছায়ামূর্তির প্রকৃত উৎস কী। এখনো ভিডিওর রহস্যময় অবয়বের বিষয়টি অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। ওর্তিজ বলেন, ‘আমার ধারণা, এটা এলিয়েনই। আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা এতটাই সৃজনশীল যে শুধু আমাদের দিয়েই জীবন সৃষ্টি থেমে যেতে পারে না।’
পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের বিশ্বাস আছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব আছে। তারা মাঝেমধ্যে পৃথিবীতে আসে। তাদের এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী বলা হয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে এই এলিয়েন দেখতে পাওয়ার দাবি করা হয়েছে। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা হয়নি।