যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে। পাশাপাশি শতভাগ ফেল করেছে দু’টি প্রতিষ্ঠান। আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে। এবার শতভাগ পাস করেছে ৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড.

মো. আব্দুল মতিন।

যশোর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় এবার ২ হাজার ৫৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৭৫টির সব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে এই সংখ্যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গতবছর শতভাগ পাস করেছিল ৪২২টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি গতবছর শতভাগ ফেলের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। এবার দু’টি প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এ দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো নড়াইলের মুলাদি তালতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের নাহালখালি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। এই স্কুল দু’টি থেকে একজন করে ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। ২০২৩ সালেও শতভাগ ফেলের তালিকায় ছিল মুলাদি তালতলা স্কুল। 

যশোর বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে শতভাগ পাসের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৯৩টি। আর ২০২২ সালে শতভাগ উত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১৩টি। আর গতবছর শতভাগ অনুত্তীর্ণ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকলেও ২০২৩ সালে যশোর বোর্ডের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যশোরের শার্শা উপজেলার সাড়াতলা নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরার তালা উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নড়াইলের মুলাদি তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই অনুত্তীর্ণ হয়েছিল। ২০২২ সালে এমন প্রতিষ্ঠান ছিল একটি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র শতভ গ প স ত র ণ হয় র শতভ গ পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রেতা হারাবে চট্টগ্রামের ৬০ শতাংশ কারখানা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কারোপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে চট্টগ্রাম। আটলান্টিকের পারে রপ্তানি হওয়া গার্মেন্ট পণ্যের ৬০ শতাংশই যায় এ বন্দরনগরী থেকে। মোট রপ্তানির ৭০ থেকে ১০০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া কারখানাও চট্টগ্রামে রয়েছে অর্ধশত। ৩৫ শতাংশের নতুন শুল্কারোপে এসব কারখানা মালিক উৎকণ্ঠায় আছেন। 

তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করা চট্টগ্রামের ৬০ শতাংশ কারখানাই এখন ক্রেতা হারাবে। প্রতিযোগী দেশগুলোর শুল্কহার কম থাকাতে ক্রেতারা এখন ঝুঁকবে সেসব দেশে। এলএনজি, গম, সয়াবিনসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে শতভাগ আমদানি করার প্রস্তাব সামনে এনে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করলে যুক্তরাষ্ট্র নমনীয় হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। অন্যথায় চট্টগ্রামের অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছেন রপ্তানিকারকরা। 

ক্লিফটন গ্রুপের কর্ণধার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের মোট রপ্তানি যদি ৯ বিলিয়ন হয়, এর ৫ বিলিয়নই করছে চট্টগ্রামের কারখানা। এখানকার ৬০ শতাংশ কারখানাই সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। উৎপাদিত পণ্যেরও ৯৫ শতাংশ যায় যুক্তরাষ্ট্রে। সরকার যদি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করে শুল্ক ঘাটতি কমিয়ে আনে, তাহলে হয়তো ৩৫ শতাংশ শুল্কহার কমাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। 

গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭৬ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রয়েছে প্রায় ৭৫৯ কোটি ডলারের। উৎপাদিত পণ্যের শতভাগ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে ফরচুন অ্যাপারেলস। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের এই প্রতিষ্ঠানটি এশিয়ান ডাফ গ্রুপের। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন, গত অর্থবছরে আমাদের রপ্তানি করা ৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাকের পুরোটা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তবে প্রতিযোগী দেশের শুল্কহারের চেয়ে বাংলাদেশের শুল্কহার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি। এ কারণে ক্রেতা হারাবে বাংলাদেশ। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে চট্টগ্রাম।

বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চীনের পরই রয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী ভিয়েতনাম। গত বছর তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ১ শতাংশেরও কম। অন্যদিকে নিকটতম প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ শতাংশের বেশি। অথচ যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের পণ্য রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণ করেছে। আর  বাংলাদেশের জন্য এ হার ৩৫ শতাংশ। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শুল্কহারে ছাড় না পেলে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করা ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আবু তৈয়ব বলেন, ২০২৪ সালে ১৬৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটির তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ এ সময়ে ৩৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দশমিক ২১ শতাংশ। অথচ ভিয়েতনাম গত বছরে ৩৩ দশমিক ৯৪ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বিদ্যমান শুল্কাহার বহাল থাকলে এবার আরও পিছিয়ে পড়ব আমরা। ক্রেতারা চলে যাবে ভারত, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া কিংবা  ভিয়েতনামে।

শুধু ভিয়েতনাম নয়; তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রতিযোগী হিসেবে আছে ভারত, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া। তারাও  উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে প্রতিবছর। ২০২৪ সালে ভারত ১৬ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। দেশটির রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। কম্বোডিয়া ২০২৪ সালে ৯ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। পাকিস্তান এ সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। দেশটির রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। ইন্দোনেশিয়া গত বছর ৮ দশমিক ৭৩ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। 

জানতে চাইলে প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে চীনের হিস্যার পরিমাণ ২০২৪ সাল শেষে ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ,  এর আগের বছরে যা ছিল ৩১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ হিস্যা থাকলেও গত বছর এটি কমে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অথচ আগের বছরের চেয়ে ২০২৪ সালে ভিয়েতনামের বাজার হিস্যা কিছুটা বেড়ে ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের বাজার প্রতিযোগী দেশে স্থানান্তর হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। চট্টগ্রামের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ইপিজেডে থাকা অনেক প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। শুল্কহার পুনর্বিবেচনা না করলে এ প্রতিষ্ঠানগুলো কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়বে। ক্রেতা হারালে একসময় বন্ধ করে দিতে হবে এসব কারখানা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রির দৃশ্য
  • মোহামেডানে নেই সাফল্যের নায়ক দিয়াবাতে
  • যশোর বোর্ডে এসএসসিতে ৭৫ স্কুলে শতভাগ পাস, ফেল ২ প্রতিষ্ঠানে
  • বরিশাল বোর্ডে পাসের হার সর্বনিম্ন, ফেল বেশি গণিত ও ইংরেজিতে 
  • ক্রেতা হারাবে চট্টগ্রামের ৬০ শতাংশ কারখানা
  • ভারতে সেতু ভেঙে নিহত ৯
  • দুদকের সেই শরিফ উদ্দিনকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ
  • কৃষিতে নারীর শ্রম সস্তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেই অধিকার
  • ফিলিস্তিনিদের গাজার বাইরে পাঠাতে ফের আলোচনা