পদবঞ্ছিতদের নিয়ে জবি ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটি বর্ধি
Published: 15th, February 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর পদবঞ্চিতদের দাবির মুখে তা বর্ধিত করা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটি গঠনে ৫১ দিন পর জবি শাখা ছাত্রদলের ৪৫৫ সদস্যবিশিষ্ট এ বর্ধিত কমিটি অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি মো.
গত ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এ আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হলো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান হিমেলকে আহ্বায়ক এবং ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুল আরেফিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল।
২৪ ডিসেম্বর ২৭ সদস্যের কমিটির হওয়ার পরে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিল, অছাত্র, অনিয়মিত, পকেট কমিটি ও ছাত্রলীগের কর্মী নিয়ে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে।
নেতাকর্মীরা আরো অভিযোগ করেছিলেন, এখানে ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির অনেক সদস্য লোকজন রয়েছে। আমরা এ কমিটিকে প্রত্যাখান করছি। একাংশের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এরপর আর ওই কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেননি।
কমিটি ঘোষণার ৩২ দিন পর গত ২৬ জানুয়ারি জবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সদ্য সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম ও সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লাসহ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায় এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
পদবঞ্চিতদের নিয়ে আন্দোলনকারী জবি ছাত্রদলের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. রায়হান হোসেন অপু বলেন, “৫ আগস্টের পর ছাত্র রাজনীতিতে এসেছে তাদের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। আহ্বায়ক এই কমিটির অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে। আমরা কমিটির অধিকাংশ আগামীকাল রবিবার ক্যাম্পাসে একটি নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য দাবি করব।”
তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে বর্তমান কমিটির দায়িত্বে থাকা আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেব না। আমরা দ্রুত একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি চাই। আমরা চাই নিয়মিত ছাত্রদের হাতে রাজনীতি ফিরে আসুক।”
৪৫৫ কমিটির বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, “প্রায় ১ হাজার ৪০০ নাম থেকে ৪৫৫ জনকে এ কমিটিতে রাখা হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে যারা জেল-জুলুমে নির্যাতিত, তাদের পদ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ ও ১৭ ব্যাচের ছাত্রদলের একনিষ্ঠ কর্মীদের এ কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে।”
আহ্বায়ক কমিটি এত বড় হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আহ্বায়ক কমিটি অল্প সদস্যের হয়ে থাকে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বড় ইউনিট। সেজন্য সবকিছু বিবেচনা করে এ বড় বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে।”
বর্ধিত কমিটির বিষয়ে আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র ন ত কর ম এ কম ট কম ট ত ক কম ট বর ধ ত কম ট র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি