জেডি ভ্যান্সের সমালোচনায় জার্মান রাজনীতিকেরা
Published: 16th, February 2025 GMT
ক্ষমতায় আসার চার সপ্তাহ পূর্ণ না হতেই ইউরোপীয় রাজনীতিকদের সমালোচনায় মেতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তাঁর এই সমালোচনার জবাবে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজসহ জার্মানির রাজনীতিকেরা তাঁকে রাজনীতিতে সংযত হতে বলেছেন।
শুক্রবার থেকে জার্মানিতে শুরু হওয়া ৬১তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের বক্তব্যকে জার্মানির সংবাদমাধ্যমগুলোসহ দেশটির রাজনীতিকেরা তির্যক চোখে দেখছেন। ভ্যান্স ইউরোপের গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, এই মহাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে আসছে না, বরং নিজেদের ভেতর থেকেই আসছে।
ভ্যান্স তাঁর বক্তব্যের বেশির ভাগজুড়ে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের সরকারগুলোকে দোষারোপ করেন। তাঁর অভিযোগ, ইউরোপের গণতান্ত্রিক দেশগুলো তাদের মূল্যবোধ থেকে সরে আসছে। অভিবাসন ও বাক্স্বাধীনতা নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগ রয়েছে।
জেডি ভ্যান্স শুক্রবার তাঁর বক্তৃতায় ইউরোপীয় মিত্রদের তীব্র আক্রমণ করে কথা বলেন এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেন।
শনিবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ দেশটির আসন্ন নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি যেকোনো নেতার হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। বক্তৃতার শুরুতে জেডি ভ্যান্সকে মিউনিখ শহরের নিকটবর্তী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ডাখাউ বন্দিশিবির এবং স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
জেডি ভ্যান্সের স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন প্রসঙ্গ টেনে ওলাফ শলৎজ বলেন,জেডি বলেছিলেন, জাতীয় সমাজতন্ত্রে নাৎসিবাদের পুনরাবৃত্তি কখনো হওয়া উচিত নয়। অথচ যারা সেই ভয়াবহ ঘটনাগুলো তুচ্ছ করে দেখে, সেই দলের নেত্রীর সঙ্গে ভ্যান্স আবার কথা বলছেন।
শলৎজ বলেন, ‘এ কারণেই আমরা আমাদের গণতন্ত্রে, আমাদের নির্বাচনে, আমাদের মতামত গঠনে বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ মেনে নেব না।’ জার্মান চ্যান্সেলর আরও বলেন, ‘এই হস্তক্ষেপ আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। আমাদের গণতন্ত্রের ধারা পরবর্তী সময়ে কী হবে, তা আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেব।’
জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হ্যাবেক জেডি ভ্যান্সের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে বলেন, ‘তাঁর আচরণে আমরা উদ্বিগ্ন।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে মৌলিক গণতান্ত্রিক ধারণাগুলোর অবক্ষয় হচ্ছে, তখন সেই দেশের একজন রাজনীতিকের মুখে এসব কথা শোভা পায় না। তিনি ভ্যান্সকে কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির ধারক বলে উল্লেখ করেন। এদিকে জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, ভ্যান্সের এসব বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
আরও পড়ুনইউরোপের গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে তুলাধোনা করলেন ভ্যান্স২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক র জন ত ক র ইউর প র আম দ র র গণত
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।