ক্ষমতায় আসার চার সপ্তাহ পূর্ণ না হতেই ইউরোপীয় রাজনীতিকদের সমালোচনায় মেতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তাঁর এই সমালোচনার জবাবে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজসহ জার্মানির রাজনীতিকেরা তাঁকে রাজনীতিতে সংযত হতে বলেছেন।

শুক্রবার থেকে জার্মানিতে শুরু হওয়া ৬১তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের বক্তব্যকে জার্মানির সংবাদমাধ্যমগুলোসহ দেশটির রাজনীতিকেরা তির্যক চোখে দেখছেন। ভ্যান্স ইউরোপের গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, এই মহাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে আসছে না, বরং নিজেদের ভেতর থেকেই আসছে।

ভ্যান্স তাঁর বক্তব্যের বেশির ভাগজুড়ে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের সরকারগুলোকে দোষারোপ করেন। তাঁর অভিযোগ, ইউরোপের গণতান্ত্রিক দেশগুলো তাদের মূল্যবোধ থেকে সরে আসছে। অভিবাসন ও বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগ রয়েছে।

জেডি ভ্যান্স শুক্রবার তাঁর বক্তৃতায় ইউরোপীয় মিত্রদের তীব্র আক্রমণ করে কথা বলেন এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেন।

শনিবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ দেশটির আসন্ন নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি যেকোনো নেতার হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। বক্তৃতার শুরুতে জেডি ভ্যান্সকে মিউনিখ শহরের নিকটবর্তী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ডাখাউ বন্দিশিবির এবং স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

জেডি ভ্যান্সের স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন প্রসঙ্গ টেনে ওলাফ শলৎজ বলেন,জেডি বলেছিলেন, জাতীয় সমাজতন্ত্রে নাৎসিবাদের পুনরাবৃত্তি কখনো হওয়া উচিত নয়। অথচ যারা সেই ভয়াবহ ঘটনাগুলো তুচ্ছ করে দেখে, সেই দলের নেত্রীর সঙ্গে ভ্যান্স আবার কথা বলছেন।

শলৎজ বলেন, ‘এ কারণেই আমরা আমাদের গণতন্ত্রে, আমাদের নির্বাচনে, আমাদের মতামত গঠনে বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ মেনে নেব না।’ জার্মান চ্যান্সেলর আরও বলেন, ‘এই হস্তক্ষেপ আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। আমাদের গণতন্ত্রের ধারা পরবর্তী সময়ে কী হবে, তা আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেব।’

জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হ্যাবেক জেডি ভ্যান্সের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে বলেন, ‘তাঁর আচরণে আমরা উদ্বিগ্ন।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে মৌলিক গণতান্ত্রিক ধারণাগুলোর অবক্ষয় হচ্ছে, তখন সেই দেশের একজন রাজনীতিকের মুখে এসব কথা শোভা পায় না। তিনি ভ্যান্সকে কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির ধারক বলে উল্লেখ করেন। এদিকে জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, ভ্যান্সের এসব বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।

আরও পড়ুনইউরোপের গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে তুলাধোনা করলেন ভ্যান্স২১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক র জন ত ক র ইউর প র আম দ র র গণত

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। 

গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।  

সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।

খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।

বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।

২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’। 

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’

ঢাকা/কেএন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে
  • ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লুলার প্রতিবাদে অন্যরাও শামিল হোক
  • এমন কিছু করবেন না যাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়: মির্জা ফখরুল
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
  • বিতর্কমুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব‍্যবস্থা না হলে গণতন্ত্র আবার হুমকিতে পড়বে: এবি পার্টি
  • মানুষ ঠিকমতো ইভিএম বোঝে না, পিআর বুঝবে কী করে: মির্জা ফখরুল