যুক্তরাষ্ট্রে ২০ অভিবাসন বিচারক বরখাস্ত
Published: 16th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ২০ জন অভিবাসন বিচারককে বরখাস্ত করা হয়েছে। কোনো ধরনের ব্যাখ্যা বা পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই তাদের বরখাস্ত করে ট্রাম্প প্রশাসন। এটি ফেডারেল সরকারের আকার কমানোর প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েটে প্রেসের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাদ্যমগুলো এ খবর প্রকাশ করেছে।
আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অফ প্রফেশনাল অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি ম্যাথিউ বিগস (যিনি অভিবাসন বিচারকদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি ইউনিয়নের প্রতিনিধি) বলেছেন, ১৩ জন বিচারককে বরখাস্ত করা হয়েছে, যারা এখনও শপথ নেননি। এছাড়াও পাঁচ সহকারী প্রধান অভিবাসন বিচারককে গত শুক্রবার কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই বরখাস্ত করা হয়েছে। একইভাবে আরও দুই বিচারককে গত সপ্তাহে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
ম্যাথিউ বিগস বলেন, এটি কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়, সত্যিই বিভ্রান্তিকর।
জানা গেছে, অভিবাসন আদালত ব্যাপকহারে অতিরিক্ত মামলার চাপে রয়েছে। যেখানে বর্তমানে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়নেরও বেশি মামলা স্থগিত রয়েছে, যা দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে আশ্রয় আবেদন নিষ্পত্তিতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে অভিবাসন পর্যালোচনা কার্যনির্বাহী অফিসে বড় পরিবর্তন হয়েছে, যার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মেরি চেংয়ের পরিবর্তে নতুন পরিচালক হিসেবে সির্সে ওউয়েনের নিয়োগ অন্তর্ভুক্ত। সাবেক অভিবাসন বিচারক ওউয়েন অনেক নতুন নীতি প্রণয়ন করেছেন।
সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত অভিবাসন বিচারক কেরি ডয়েল লিংকডইনে উল্লেখ করেছেন, তিনিসহ অন্যান্য বাইডেন প্রশাসনের আমলে নিয়োগ পাওয়া বিচারকদের গত শুক্রবার ই-মেলের মাধ্যমে বরখাস্তের খবর জানানো হয়।
এ নিয়োগের আগে ডয়েল বাইডেন প্রশাসনের অধীনে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের ডেপুটি জেনারেল কাউন্সিলর পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি তার নিজের লিংকডইন পোস্টে উল্লেখ করেন, এই বরখাস্তের ঘটনা এমন সময় ঘটলো, যখন অভিবাসন আদালতে প্রায় ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন মামলা স্থগিত রয়েছে। বিচার বিভাগের (ডিওজে) পক্ষ থেকে কংগ্রেসের কাছে ইওআই আর এতে আরও লোক নিয়োগের জন্য অতিরিক্ত বাজেট চাওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব চ রকক
এছাড়াও পড়ুন:
গেইল-পেরেরাদের পারিশ্রমিক, হোটেল বিল না দিয়েই লিগের আয়োজকেরা পালিয়েছেন
টুর্নামেন্টের নাম ইন্ডিয়ান হেভেনস প্রিমিয়ার লিগ বা আইএইচপিএল। ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরে আয়োজিত টুর্নামেন্টটি ক্রিস গেইল, থিসারা পেরেরাদের জীবনে নিয়ে এসেছে মহা বিড়ম্বনা। বিশ্ব ক্রিকেটের নামি এই খেলোয়াড়দের হোটেলে রেখে শহর থেকে পালিয়ে গেছেন লিগের আয়োজকেরা। খেলোয়াড়, ম্যাচ কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি, পরিশোধ করা হয়নি হোটেলের বিলও।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে। গত ২৫ অক্টোবর আট দল নিয়ে শুরু হওয়া আইএইচপিএল শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ নভেম্বর। কিন্তু শনিবার সকালে খেলোয়াড়দের জানানো হয়, কারিগরি কারণে দিনের খেলা বাতিল করা হয়েছে। এরপর রোববার সকালে হোটেলে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা জানতে পারেন, আয়োজকেরা আগের রাতে শ্রীনগর ছেড়ে চলে গেছেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়োজকদের কাছ থেকে তারা কোনো বিল পায়নি। সেই সময় প্রায় ৪০ জনের মতো খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা হোটেলেই আটকা পড়েছিলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কর্মকর্তা মেলিসা জুনিপার আইএইচপিএলে আম্পায়ারিং করতে গিয়েছিলেন। শ্রীনগরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আয়োজকেরা হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন। তারা হোটেল, খেলোয়াড় বা আম্পায়ার কারও বিল পরিশোধ করেননি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি যেন সবাই বেরিয়ে যেতে পারে।’
শ্রীনগরের যে হোটেলে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছিল, সেখানকার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আয়োজকেরা ১০ দিন আগে খেলোয়াড়দের জন্য ১৫০টি কক্ষ চেয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, ক্রিস গেইলের মতো তারকার কারণে কাশ্মীরের পর্যটন উপকৃত হবে। কিন্তু রোববার সকালে দেখি তাঁরা উধাও হয়ে গেছেন। আমাদের বিলও দেননি। গেইলসহ কয়েকজন খেলোয়াড় শনিবারই হোটেল ছেড়ে চলে গেছেন।’
গেইল ছাড়াও টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা, নিউজিল্যান্ডের জেসি রাইডার, দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি এবং ওমানের আয়ান খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুর্নামেন্টের প্রচারণায় যে সব পোস্টার ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটিতে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের ছবিও বড় আকারে দেখা গেছে।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার পারভেজ রসুল এই টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। তিনি জানান, কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় হোটেলে আটকা পড়েছিলেন। পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা বেরিয়ে যান, ‘এক ইংলিশ আম্পায়ার হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছিলেন’।
স্থানীয় এক ক্রিকেটার জানান, আয়োজকেরা সম্ভবত ধারণাই করতে পারেননি এমন একটি টুর্নামেন্ট চালাতে কত বড় বাজেট প্রয়োজন। শেষ মুহূর্তে স্পনসররা সরে যাওয়ায় অর্থ সংকট তৈরি হয়েছিল, ‘প্রথম দিন নির্ধারিত পোশাকও ছিল না, স্থানীয়ভাবে কিনে আনা হয়েছিল। কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গেও লিখিত চুক্তি করা হয়নি।’
টুর্নামেন্টটির আয়োজক ছিল যুবা সোসাইটি মোহালি নামের একটি সংস্থা। সহযোগিতায় ছিল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্পোর্টস কাউন্সিল। কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানান, আইএইচপিএল সভাপতি আশু দানি পুলিশের ছাড়পত্র ও মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলেন, ‘তারা আমাদের টাকা দিয়েছে। এখানে সরকারের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই। কেন লিগ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেল, আমরা জানি না।’
তবে ২২ অক্টোবরের একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভাগীয় কমিশনার অংশুল গার্গের সভাপতিত্বে আইএইচপিএল নিয়ে এক প্রস্তুতি সভার কথা উল্লেখ ছিল, যেখানে অনুমান করা হয়েছিল বকশি স্টেডিয়ামে ২৫–৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে দর্শক উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। টিকিটের দাম কমিয়েও সাড়া মেলেনি।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।