গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বর্বরতা যেন থামছেই না। নতুন করে আবারও পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীরা। শনিবার থেকে অন্তত পাঁচটি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।

এর মধ্যে পশ্চিম তীরের সালফিত শহরে ভারী সামরিক যানবাহনসহ অভিযান চালিয়ে সাবেক ফিলিস্তিনি বন্দি সাঈদ শাতায়েহর বাড়ি ঘেরাও করে তাঁর পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। শনিবার ইসরায়েলি বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া শাতায়েহকে নিজ বাড়িতে ফিরতে না দিয়ে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শহরের কাছে আররাবেহ থেকে এক ফিলিস্তিনি যুবককে গ্রেপ্তার করলে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তখন ইসরায়েলি সেনারা দুই ফিলিস্তিনি শিশুকেও আটক করে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

সেনাদের ছত্রছায়ায় ফিলিস্তিনিদের ওপর দমনপীড়নের মাত্রা বাড়িয়েছে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরাও। হেবরনের কাছের সুরিফ শহরে সৈন্যদের সহযোগিতায় অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় এক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এর আগে নাবলুসের জালুদ গ্রাম, রামাল্লার উম সাফায় তারা ফিলিস্তিনিদের ওপর অতর্কিত গুলি চালালেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে গাজার অস্থায়ী আবাসনে বাস্তুচুত্য ফিলিস্তিনিদের ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। বাধ্য হয়ে গত ১৫ মাসের হামলায়  ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ভবনে তীব্র শীতে রাত কাটাচ্ছেন অনেক ফিলিস্তিনি।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের অনুমোদনে ভারী বোমার চালান পেয়েছে ইসরায়েল। গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর ওপর ২ হাজার পাউন্ড ওজনের এই বোমার সম্ভাব্য প্রভাবের কথা বিবেচনা করে ইসরায়েলে রপ্তানির অনুমোদন দেয়নি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। তবে ট্রাম্প সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর এই চালান পাঠানো হলো।

তেল আবিবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বৈঠকের পর ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন রুবিও।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ