বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন : তারেক রহমান
Published: 18th, February 2025 GMT
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। তিস্তা খনন ও পানি সংরক্ষণের জন্য জলাধার নির্মাণ করা হবে। প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচি পুনরায় শুরু করা হবে।’’
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু পয়েন্টসহ নদীবেষ্টিত পাঁচ জেলার ১১ পয়েন্টে চলমান ৪৮ ঘণ্টার তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ আর কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর মতো লাশ দেখতে চায় না। সীমান্তে রক্তাক্ত দেহও আর দেখতে চায় না।’’
আরো পড়ুন:
বিএনপিতে সুযোগ সন্ধানীদের স্থান নেই: দুলু
উপদেষ্টাদের উদ্দেশে ফখরুল
‘ক্ষমতার খায়েশ থাকলে পদত্যাগ করে দল গঠন করুন’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সব আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে ভারত গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে আমাদের দেশের পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের এই অ-প্রতিবেশী আচরণের কারণে উত্তরাঞ্চলের লাখো মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। পানির অভাবে তিস্তা অঞ্চল ধূ ধূ বালুচরে পরিণত হয়েছে।’’
তারেক রহমান বলেন, ‘‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছে। অথচ ভারত তিস্তার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষসহ এদেশের জনগণকে মনে না রেখে পলাতক স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে। গত ১৬ বছর ধরে স্বৈরাচারী সরকার একতরফা চুক্তির মাধ্যমে ভারতকে সুবিধা দিয়ে এসেছে। তাদের অপ্রতিবেশী আচরণের কারণে আজ তিস্তা পাড়ে অধিকার আদায়ের গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হচ্ছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘এবার ভারত যদি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না দেয়, তাহলে জনগণকে বাঁচাতে, কৃষিকে বাঁচাতে, নদীকে রক্ষা করতে এবং নাব্যতা ধরে রাখতে সমস্যার সমাধানের পথ আমাদেরই খুঁজে নিতে হবে। অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিকভাবে সম্ভাব্য সব কৌশল কাজে লাগাতে হবে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের ওপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে।’’
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচনের কথা শুনলে অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ কেউ বিচলিত হয়ে পড়েন। একেক উপদেষ্টা একেক রকম বক্তব্য দেন। দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে একটি নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন রয়েছে।’’
সবশেষে তারেক রহমান আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে উপস্থিত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘আজ এখান থেকে প্রতিজ্ঞা নিতে হবে, ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই; জাগো বাহে, দেশ বাঁচাই।’ এই হোক আমাদের শপথ।’’
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর নেতৃত্বে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ছাড়াও তিস্তা-সংলগ্ন পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে একযোগে এই আন্দোলন চলছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
তিস্তা নদী পাড়ে লাখো মানুষ সামিয়ানা টাঙিয়ে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করছে। আজ রাত ১২টায় শেষ হবে ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার এ কর্মসূচি।
ঢাকা/আমিরুল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব এনপ র সরক র ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।