বরিশালের গৌরনদীতে তারেক আহসান প্যাদা নামে এক ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে এক প্রবাসীর অর্থ ও মালপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সালিশে অর্থ ও মালপত্র ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও ওই ছাত্রদল নেতা তা ফেরত দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। 

ভুক্তভোগী আব্বাস সিকদার (৪৫) একজন ওমানপ্রবাসী। তিনি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নের জজিরা গ্রামের বাসিন্দা। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আব্বাস সিকদার গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় একটি মোটরসাইকেল নিয়ে পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে মামা বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওই দিন রাত ৯টার দিকে তিনি মামা বাড়ির পাশের কুতুবপুর বাজারে গিয়ে একটি চায়ের দোকানের কোণে বসে ওমান থেকে আনা নেশা জাতীয় দ্রব্য সিসা গ্রহণ করেন। এ দৃশ্য দেখে ফেলে এলাকার কয়েক যুবক। এর পর তিনি মোটরসাইকেলে মামা বাড়ির দিকে ফেরার সময় গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক আহসান (তারেক প্যাদা) ও তাঁর সহযোগী ইব্রাহীম খান, জুয়েল খলিফা, সুমন খান মিলে আব্বাসের পথরোধ করে। একপর্যায়ে তারা আব্বাস সিকদারকে মারধর করে তাঁর মানিব্যাগ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা, বিদেশি মুদ্রা, স্বর্ণের চেন ও আংটি, বিদেশি হাতঘড়ি, মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেন। এ ছাড়া তারা আব্বাসের মোবাইল ফোনের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ২৯ হাজার টাকা সরিয়ে নেয়। পরবর্তী সময়ে তারা ওই প্রবাসীর মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেলটি ফেরত দিয়ে তাঁকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। 

পরদিন সকালে এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে প্রবাসীর মালপত্র উদ্ধারে তাঁর স্বজনরা নলচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো.

জামাল ফকিরসহ স্থানীয় নেতাদের দ্বারস্থ হন। ওই নেতারা তারেক প্যাদাকে ডেকে প্রবাসীর অর্থ, স্বর্ণালংকার ও হাতঘড়ি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ ঘটনার এক মাস অতিবাহিত হলেও ছাত্রদল নেতা তারেক প্যাদা ও তাঁর সহযোগীরা প্রবাসীর অর্থ ও মালপত্র ফেরত দেননি। পরে ওই প্রবাসী ও তাঁর স্বজনরা আবারও বিএনপির স্থানীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ করলে তারা জানান, তারেক প্যাদা তাদের নির্দেশ মানছে না। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগের পরামর্শ দেন তারা। 

ভুক্তভোগী প্রবাসী আব্বাস সিকদার সমকালকে বলেন, তিনি ১৪ বছর ধরে ওমানে আছেন। এবার ৯ বছরের বেশি সময় পর তিনি ছুটিতে দেশে এসেছেন। ১৫ মার্চের আগেই আবার তিনি ওমানে ফিরে যাবেন। এখন পুলিশের কাছে অভিযোগ বা মামলা দিলে প্রবাসে বসে তিনি কীভাবে মামলার কার্যক্রম চালাবেন– এটা ভেবে পুলিশে অভিযোগ দেননি। তাঁর এ অপারগতার সুযোগ নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা। 

অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা তারেক আহসান (তারেক প্যাদা) বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রতিপক্ষ তাঁর নামে মিথ্যা রটাচ্ছে।

এ বিষয়ে নলচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জামাল ফকির বলেন, তিনি ঘটনা জানার পর তারেক প্যাদা ও তার বাবা আতাহার প্যাদাকে ডেকে ছিনিয়ে নেওয়া মালপত্র ফেরত দিতে বলেন। তারা ফেরত দেওয়ার ওয়াদা করে গেলেও ফেরত দেননি। ফলে তিনি ভুক্তভোগী ও তাঁর স্বজনদের পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল বর শ ল ছ ত রদল ন ত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম। গতকাল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। 

দুদক গত ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে আদেশ জারি করলেও গতকালই বিষয়টি জানাজানি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আহমদ কায়কাউস। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ চুক্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা এবং এ নিয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখতে হবে।   

আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২৫ বছরের এ চুক্তির পদে পদে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ