ছাত্র আন্দোলনে পারভেজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ফতুল্লা থানায় দায়েরকৃত মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগ নেতা সজিব ও তার বাহিনীর অন্যতম সহযোগী  মোমিন, মুন্না দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিলেও সম্প্রতি এলাকায় ফিরে পুরোনো আধিপত্য পুনুরুদ্ধার করতে ফের নানা অপকর্মে নেমে পড়েছে।

সজিব, মোমিন ও মুন্নাসহ এই বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা এলাকায় নিয়মিত মহড়া দিচ্ছে। মাদক, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রন, চাঁদা আদায়, জোরপূর্বক মানুষের জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে ফের বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। 

এরফলে এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ আতংকে দিনাতিপাত করছে। যে কেনো মুহুর্তে বড় ধরনের নাশকতার আশংকাও করছেন স্থানীয় মহল। সেই সাথে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রকাশ্যে অপরাধ কর্মকান্ড চালানোর পরও পুলিশের নিরব ভুমিকা নিয়ে।

স্থানীয়রা জানান, নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য একেএম নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগ নেতা সজীবের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগের যেনো শেষ নেই।

দল ক্ষমতায় থাকাবস্থায় আজমেরী ওসমানের নাম ব্যবহার করে বিসিক শাসনগাওসহ নবীনগর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল যুবলীগ নেতা সজীব ও তার বাহিনী। 

ভুক্তভোগীরা বলছেন, অনতিবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় আনা হলেই আজমেরী ওসমানের নির্দেশনায় করা সব অপকর্মের খবর বেরিয়ে আসবে।

জানাগেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার এর পতনের পর নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যায় ওসমান পরিবারের সকল সদস্য। এরপর থেকে আজমেরী ওসমানের অনুসারীরাও এলাকা ছাড়ে।  

এদিকে, আজমেরী ওসমান পালিয়ে যাওয়া মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষজন। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দল ক্ষমতায় থাকা সময় আজমেরী ওসমানের নামে পুরো এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক, ঝুট সন্ত্রাস ও ভুমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বেড়াতো সজীব, মোমিন, মুন্না ও তার বাহিনী।  অনেক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে নিয়মিত চাঁদা নিতো সজিব। যারা এখন ক্ষোভে ফুসছে।


কিছুদিন আগেও চর বক্তাবলীতে দেওয়ান স্টীল মিল দখলের চেষ্টা চালিয়েছে মুন্নাসহ অন্যান্যরা। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অবিযোগ দায়ের করেন ওই কারখানার স্বত্তাধিকারী ইমরান। 

এলাকাবাবাসীর দাবি সজীব, মোমিন, মুন্নাসহ এ বাহীনির সকলের কাছে অস্ত্র রয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সকল অস্ত্র উদ্ধার করা হউক। নচেৎ এলাকা ফের অশান্ত হয়ে উঠবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ওসম ন ওসম ন র এল ক য় সহয গ আজম র

এছাড়াও পড়ুন:

কেউ অপকর্ম করতে চাইলে সরাসরি ধরে পুলিশের কাছে দেবেন: মির্জা ফখরুল

বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী অপকর্ম করলে তাঁদের ধরে পুলিশের দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের মোলানী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণসংযোগের সময় তিনি এ বক্তব্য দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দেশের জনগণের কাছে সবচাইতে নির্ভরশীল-নিরাপদ দল হচ্ছে বিএনপি। বিএনপিকে নিয়েই দেশের মানুষ আগামীর সরকার গঠন করতে চায়। এই অঞ্চলের মানুষ প্রথম থেকেই ধানের শীষে ভোট দিয়ে থাকে। আপনারা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করেন। অন্যায় করলে মানুষ ক্ষমা করবে না। আওয়ামী লীগকে যেভাবে ছুড়ে দিয়েছে, আপনাদেরও সেভাবে ছুড়ে দেবে। অন্যায় যেন কেউ না করেন, সেটা খেয়াল রাখবেন।’

নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিজেরা অত্যন্ত শক্তি নিয়ে আপনারা অপকর্মগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করবেন। কেউ যদি করতে চায়, তবে আমাদের জেলার নেতাদের বলবেন, না হয় সরাসরি ধরে পুলিশের কাছে দেবেন।’

আয়নাঘর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা কী আয়নাঘরের কথা শুনেছেন? ওই ঘরটা কী জানেন? যাদের ওরা (আওয়ামী লীগ) মনে করেছে সরকারের জন্য ভালো না, সে সমস্যা করতে পারে; তাঁকে পুলিশ পাঠিয়ে তুলে নিয়ে গেছে। তুলে নিয়ে গুম। খবর নাই আর। এমন অসংখ্য ঘটনা। আমরা তো এমন ঘটনার হিসাব করেছিলাম ৮০০ থেকে ৯০০ হবে। পরে হাসিনা পালানোর পর জাতিসংঘ থেকে টিম আসল। তাঁরা বললেন, আয়নাঘরে ১ হাজার ৭০০ মানুষকে আটকে রাখা হয়েছিল।’

আরও পড়ুনরাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে সরকারের উচিত ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা: মির্জা ফখরুল২৮ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ দেশের এমন একটা মানুষ নেই, যে কষ্ট শিকার করেনি। আমাদের সামনে এখন একটা সুযোগ এসেছে। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে আমরা সবাই মিলে ভোট দিয়ে সংসদ নির্বাচন করতে চাই, সরকার নির্বাচন করতে চাই। যে সরকার আমাদের কথা শুনবে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা এই সমাজে কোনো বিভেদ রাখতে চাই না। আমরা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা একটা ভালোবাসার বাংলাদেশ দেখতে চাই। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা (আওয়ামী লীগ) একটা ধোয়া ওঠাল যে হিন্দুদের নাকি মেরে ফেলা হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, এখানে কয়টা হিন্দু মারা গেছে? কিন্তু ওরা এই কথাটা তুলছে। শুধু তুলছে না, সারা পৃথিবীতে এই কথাটা ছড়িয়ে দিয়েছে। উল্টো আমাদের ছেলেরা হিন্দু ভাইদের মন্দির-বাড়ি পাহারা দিয়েছে। মিথ্যাকে সত্য দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না।’

হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা সব সময় একটা কথা মনে রাখবেন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি, ঠাকুরগাঁও একটা শান্তিপ্রিয় এলাকা। আমরা এই এলাকায় সবাই ভাইবোনের মতো বসবাস করি। এখানে কারও যেন কোনো ক্ষতি না হয়, আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই। যখন কোনো গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি, বিএনপির আমলে আপনারা সবচাইতে নিরাপদে থাকবেন।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কেউ কেউ সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ফ্যাসিবাদ হাসিনা নাকি আবার ফিরে আসবে। ফিরে এলে আমাদের কিছু করতে হবে না, তার ব্যবস্থা মানুষজনই নিয়ে নেবে। সে যে অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়েছে, তার হিসেব মানুষই নিয়ে নেবে। আর ফিরে এলেও তাকে এ দেশের মানুষ আর রাজনৈতিকভাবে গ্রহণ করবে না।’

মোলানী উচ্চবিদ্যালয়ে গণসংযোগের পর মির্জা ফখরুল মহাদেবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও চিলারং রেলঘুণ্টি এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনট্রাম্প-সি-মোদি এসে বাংলাদেশে কিছু করে দিয়ে যাবেন না: মির্জা ফখরুল১৯ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেউ অপকর্ম করতে চাইলে সরাসরি ধরে পুলিশের কাছে দেবেন: মির্জা ফখরুল