অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে জোবায়ের মিলনের গল্পগ্রন্থ ‘মাথাহীন মানুষের দেশে’। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। এটি প্রকাশ করেছে বিদ্যাপ্রকাশ। বইটিতে মোট ১২টি গল্প রয়েছে। 

এই বইয়ের গল্পগুলোর পটভূমি সম্পর্কে লেখক জানিয়েছেন, জীবন এবং যাপনের বহুতরো যন্ত্রণা, নিঃসঙ্গতার কাঁটাতার, আমাদের মেরুদণ্ডহীনতা, মগজের মৃত্যু, সাম্প্রদায়িক-অসাম্প্রদায়িক-প্রগোতিশীলতার চির দ্বন্দ্ব, শাসকের অন্যায্য কর্মকাণ্ড, শোষকের অট্টহাসি, গর্বিত মানুষের ক্রমবর্ধিষ্ণু অহমিকা, অব্যক্ত দীর্ঘশত্রুতা, বহতায় বাধা, পদের ঔদ্ধত্য অসহনীয় হয়ে উঠলে ঘোর বৃত্তাবর্তে যে গর্তের সৃষ্টি হয়—হয় যে অভিঘাতজনিত অতি ক্রিয়া.

..তারই আবছায়া। 

বইয়ের ফ্ল্যাপে সরকার আব্দুল মান্নান লিখেছেন, বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার যে ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের পরিচয় আছে, সেই ইতিহাসে সংঘাতের স্বরূপচারিত্র্য নতুন কোনো বিষয় নয়। বরং এই দ্বন্দ্ব চির পুরাতন এবং চির নতুন। কেউ যদি বলে, এই সব বিষয় নিয়ে তো অনেক গল্প-উপন্যাস-নাটক রচিত হয়েছে, আর কেন? তাহলে সেই ভাবনা সঠিক নয়। কেননা, একজন সৃষ্টিশীল মানুষ নতুন কোনো ঘটনা লেখেন না। তিনি নতুন গল্প বানান না। তিনি সৃষ্টি করেন নতুন আখ্যান, সৃষ্টি করেন নতুন এক বিন্যাস, নতুন এক জীবন শৈলী। যিনি নতুন পটভূমির আলেক্ষ্যে নতুন কোনো জীবনাকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করতে পারেন, তিনি মহৎশিল্পী। এখানে গল্প বা ঘটনা কোনো বিষয় নয়—বিষয় হলো জীবনতৃষ্ণা এবং তৃষ্ণার জল কীভাবে পরিবেশিত হলো। মিলন এই পরিবেশষনায় যত্নের পরিচয় দিয়েছেন। যে যত্নটুকু, মমতাটুকু কথাসাহিত্য নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুন:

বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে গাজী মুনছুর আজিজের ভ্রমণগ্রন্থ পাখির খোঁজে বাংলাজুড়ে’

জাহিদ সোহাগের কবিতার বই ‘চেয়ারের মুখোমুখি’

‘মাথাহীন মানুষের দেশে’ গল্পগ্রন্থটি বইমেলায় পাওয়া যাবে বিদ্যাপ্রকাশের ১২৯,১৩০,১৩১,১৩২ নম্বর স্টলে। বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ২৮০ টাকা।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বইম ল য় প ত হয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ