বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। সেই ব্যবস্থা করুন। আর অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বলব-আপনারা এমন কোন কথা বলবেন না, যেন জাতির ঐক্য নষ্ট হয়। এই মুহূর্তে দেশে ঐক্যের বড় প্রয়োজন। এই ক্রান্তিকালে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। 

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কুমিল্লার লাকসাম জংশন স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশ একটা ক্রান্তিকাল পার করছে। একটা ফ্যাসিবাদ গোটা বাংলাদেশকে শেষ করে দিয়েছি। আমরা ছাত্র-জনতা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। অত্যাচার করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। কিন্তু হাসিনা ভারতে গিয়ে দিল্লিতে বসেও ষড়যন্ত্র করছে। ভারত আমাদের বৃহত্তর প্রতিবেশী। কিন্তু ভারত যদি মনে করে শুধু আওয়ামী লীগই তাদের বন্ধু, এটা ভুল।”

শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম হওয়া লাকসামের বিএনপি নেতা হিরু হুমায়ূনের সন্তানদের কথা স্মরণ করিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “এমন ৭০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছিল। তার মধ্যে সিলেটের নেতা ইলিয়াসকেও গুম করা হয়েছে। ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছে শেখ হাসিনা।” 

সংস্কারের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “মোটা কাপড়, মোটা ভাত, মাথার উপর ছাদ এগুলোই হলো সংস্কার। এখন যে ব্যবস্থা চলছে, তাতে শান্তি আসবে না। তারেক রহমান যে ৩১ দফা দিয়েছে তাতেই সমাধান আছে। দয়া করে দেশকে আর নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাবেন না। যতটুকু সংস্কার দরকার, ততটুকু সংস্কার করেন। কাল বিলম্ব না করে দ্রুত নির্বাচন দেন ভোটের একটা রোডম্যাপ জনগণকে জানিয়ে দেন।”

বিকেল তিনটায় সমাবেশ শুরুর আগে পবিত্র কোরান থেকে তেলোয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়। তারপর নেতৃবৃন্দ ৩১টি পায়রা উড়িয়ে ৩১ দফার উদ্বোধন করেন। দীর্ঘ ১৫ বছর পর বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লাকসামে জনসভায় হাজারো নেতাকর্মীর ঢল নামে। 

লাকসাম উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো.

আবুল কালামের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকাতুল্লাহ বুলু, বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন লাকসাম-মনোহরগঞ্জ সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম। 

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ উপনির্বাসন সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভুইয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন; 

যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আমিরুজ্জামান আমির, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কফিল উদ্দিন, লাকসাম পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব মজির আহমেদ; 

লাকসাম পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাশেম মানু, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ডাক্তার নুরুল্লাহ রায়হান, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহমান বাদল, পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব বেলালুর রহমান মজুমদার, মনোহরগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক শাহ সুলতান খোকন, সাবেক সভাপতি ইলিয়াস পাটোয়ারী; 

লাকসামের গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম হিরুর ছেলে রাফসান, হুমায়ুন পারভেজের ছেলে শাহরিয়ার, সাবেক ছাত্রনেতা আয়েজ আলীসহ নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা/রুবেল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ রহম ন ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’

ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ