ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম উত্তেজনাপূর্ণ দ্বৈরথ ভারত-পাকিস্তান। ওয়ানডে ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ১৩৫ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। আগামীকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আবারও মুখোমুখি হচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দল। ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় এই লড়াইয়ে সেরা পাঁচ ওয়ানডে ম্যাচ তুলে ধরেছে এএফপি স্পোর্টস।

১.

মিয়াঁদাদের ছক্কা (১৮ এপ্রিল, ১৯৮৬ - শারজাহ): এশিয়া কাপের ফাইনালে শেষ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল চার রান। চেতন শর্মার করা শেষ বলটি ছক্কায় পরিণত করে পাকিস্তানকে ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। ১১৪ বলে অপরাজিত ১১৬ রানের ইনিংস খেলে নায়ক হয়ে যান তিনি। মরুভূমির শহরে এই জয় পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে আছে।

২. ইমরানের দুর্দান্ত বোলিং, কিন্তু জয় ভারতের (২২ মার্চ, ১৯৮৫ - শারজাহ): চার জাতির টুর্নামেন্টে প্রথমে ব্যাট করা ভারত মাত্র ১২৫ রানে অলআউট হয়, যেখানে ইমরান খান ১৪ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেন। তবে ১২৬ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন রমিজ রাজা। ইমরানের অসাধারণ বোলিংও শেষ পর্যন্ত বৃথা যায়।

৩. জাদেজার বিধ্বংসী ব্যাটিং (৯ মার্চ, ১৯৯৬ - ব্যাঙ্গালুরু): ১৯৯৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ৪২তম ওভার পর্যন্ত ভারত সংগ্রহ করেছিল ২০০ রান। এরপরই শুরু হয় অজয় জাদেজার ঝড়। ২৫ বলে ৪৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ভারতের স্কোর নিয়ে যান ২৮৭ রানে। জবাবে আমির সোহেল ও সাইদ আনোয়ারের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু করলেও ২৪৮ রানে থামে পাকিস্তান। ৩৯ রানে জয় পেয়ে সেমিফাইনালে উঠে ভারত।

৪. টেন্ডুলকারের ব্যাটিং ঝড় (১ মার্চ, ২০০৩ - সেঞ্চুরিয়ন): ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সাইদ আনোয়ার সেঞ্চুরি করে দলকে ৭ উইকেটে ২৭৩ রানে পৌঁছে দেন। কিন্তু শচীন টেন্ডুলকার পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপকে ধ্বংস করে দেন ৭৫ বলে ৯৮ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংসে। তার ব্যাটিং তাণ্ডবে ৬ উইকেটের সহজ জয় পায় ভারত।

৫. ফখর জামানের বিস্ফোরক ইনিংস (১৮ জুন, ২০১৭ - লন্ডন): আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে ৩৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ এনে দেন ওপেনার ফখর জামান। ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ১১৪ রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তানের বড় জয়ের ভিত্তি গড়ে দেন তিনি। জবাবে মাত্র ১৫৮ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। মোহাম্মদ আমির ও হাসান আলি ৩টি করে উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন করেন।

ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথ সবসময়ই উত্তেজনাপূর্ণ। আগামীকাল দুবাইতে হতে যাওয়া ম্যাচেও দর্শকরা তেমনই রোমাঞ্চকর লড়াই প্রত্যাশা করছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ