দিনশেষে বই একটি সৃজনশীল পণ্য: পলাশ মাহবুব
Published: 23rd, February 2025 GMT
এই প্রজন্মের লেখক পলাশ মাহবুব। সাবলিল ভাষা আর বক্তব্যের তীব্রতাকে উপজীব্য করে সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় লেখেন তিনি। লেখালেখির জন্য অর্জন করেছেন অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গের অন্নদাশঙ্কর রায় সাহিত্য পুরস্কার, মীনা অ্যাওয়ার্ডসহ আরও কিছু পুরস্কার।চলতি বইমেলায় তার একাধিক নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। নতুন বইয়ের প্রেক্ষাপটসহ নানা বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন এই লেখক। সাক্ষাৎকার গ্রহণে স্বরলিপি।
রাইজিংবিডি: এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রেমাণুকাব্য’ এবং ‘পমার বচন-২’। এই দুইটি বইয়ের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।
পলাশ মাহবুব: 'পমার বচন ২' এবং 'প্রেমাণুকাব্য' দুটিই ক্ষুদ্রাকৃতির বই। গত বছর প্রথম ‘পমার বচন’ প্রকাশিত হয়। পমার বচন মূলত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর মজার এবং অন্তর্নিহিত অর্থপূর্ণ ছোট ছোট বচন, ভবিষ্যতে যেসবের প্রবাদ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। প্রকাশিত হওয়ার পর ‘পমার বচন’ পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া তৈরি করে। ফলে এ বছর প্রকাশিত হয়েছে পমার বচনের নতুন বই- ‘পমার বচন ২’। আর প্রেমাণুকাব্য হচ্ছে প্রেম ও ভালোবাসাকে আশ্রয় করে লেখা ছোট ছোট অনুকাব্যের বই। এছাড়া এবারের বই মেলায় আমার আরও একটি বই প্রকাশিত হয়েছে, সেটি কিশোর উপন্যাস- ‘তেরো নম্বর তুলকালাম’। তেরো নম্বর তুলকালাম আমার লেখা ‘লজিক লাবু’ কিশোর সিরিজের ৭ম উপন্যাস। তিনটি বই’ই প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।
রাইজিংবিডি: ‘খনার বচন’ কি ‘পমার বচন’ নামকরণে প্রভাব ফেলেছে?
পলাশ মাহবুব: নিঃসন্দেহে। পমার বচন ধারণাটি 'খনার বচন' থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নেওয়া। পমার বচনের প্রথম বই বচন সম্রাজ্ঞী খনাকে উৎসর্গ করা।
আরো পড়ুন:
‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
বইমেলায় শরীফ ওবায়েদুল্লাহর ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ: পথ না হোক শিশুর ঠিকানা’
রাইজিংবিডি: কিশোর উপন্যাস, মুক্তিযুদ্ধ, শিশু-কিশোর গল্পগ্রন্থ, গল্পগ্রন্থ, উপন্যাস, রম্যগল্পগ্রন্থ, শিশু-কিশোর ছড়া-কবিতা, টেলিভিশন নাটক এবং প্রেমাণুকাব্য লিখছেন। এই একাধিক ঘরানার লেখা—প্রত্যেক ঘরানায় লেখার মৌলিকত্ব বজার রাখার জন্য কি করেন?
পলাশ মাহবুব: সত্যিকার অর্থে অনেকগুলো জনারাতে আমি লেখালেখি করি। তবে সব একসঙ্গে লেখি না। সাধারণত বিরতি দেই। এবার যেমন পমার বচন, প্রেমাণুকাব্য আর কিশোর উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। সামনের মেলায় হয়তো দেখা যাবে ছোটদের গল্পের বই থাকবে, বড়দের উপন্যাস থাকতে পারে, হয়তো প্রেমাণুকাব্য থাকবে না। এভাবে বিরতি দিয়ে একেক সময়ে একেক বিষয়ে লেখার চেষ্টা করি। আর টেলিভিশনের জন্য নাটক সাধারণত উৎসব কেন্দ্রিক লেখা হয়ে থাকে। মূলত ঈদকে কেন্দ্র করে। আর এই যে নানা বিষয়ে লিখছি এর চর্চা অনেকদিন ধরেই করছি ফলে নিজের মধ্যে এক ধরণের অভ্যস্থতাও এসে গেছে।
রাইজিংবিডি: সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ তথা সিসিমপুরের-এর গণমাধ্যম ও জনসম্পর্ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। এই অভিজ্ঞতা আপনার শিশুসাহিত্য রচনায় প্রভাব ফেলেছে কীভাবে?
পলাশ মাহবুব: সব অভিজ্ঞতাই কোনো না কোনোভাবে কাজে লাগে। আর সিসিমপুর যেহেতু শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং গ্রহণযোগ্য একটি প্রতিষ্ঠান ফলে অনেক কিছুই শিখছি-জানছি। বিশষে করে শিশুদের মনোজগত এবং শিশুদের জন্য লেখা কি রকম হওয়া উচিত এসব শিখছি প্রতিনিয়ত।
রাইজিংবিডি: স্বীকৃতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
পলাশ মাহবুব: স্বীকৃতি আমার কাছে আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। সত্যিকারের স্বীকৃতি আমি উপভোগ করি।
রাইজিংবিডি: প্রকাশনীগুলোর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
পলাশ মাহবুব: গত ২৫ বছর ধরে আমার বই প্রকাশিত হচ্ছে। সেই ২০০০ সাল থেকে শুরু। ফলে নানা ধরণের প্রকাশকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। আর অভিজ্ঞতা যেহেতু হয়েছে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষাও নিয়েছি কিছুটা। বিগত পাঁচ-ছয় বছর ধরে হাতেগোনা নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রকাশনী থেকেই আমার বই প্রকাশিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে যারা ন্যূনতম পেশাদার তাদের সাথেই কাজ করছি।
রাইজিংবিডি: লেখকের প্রচার কৌশল কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
পলাশ মাহবুব: দিনশেষে বই একটি পণ্য। তবে সৃজনশীল পণ্য। এক কথায় যদি বলি, আমি আমার বইয়ের বহুল প্রচার প্রত্যাশা করি। অনেক মানুষ আমার বই পড়বেন সেই উদ্দেশ্য থেকেই আমি লিখি। ফলে এমনিতেই বইয়ের প্রচার হওয়া প্রয়োজন। আর আমাদের দেশের মানুষের পাঠাভ্যাস এবং বই কেনার প্রবণতা যেহেতু কম সুতরাং আমাদের দেশের ক্ষেত্রে প্রচারটা আসলে প্রয়োজনেরও এক ধাপ ওপরে- জরুরি। এখন কথা হচ্ছে লেখক কীভাবে তার বইয়ের প্রচার করবেন? বইয়ের খবর মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার স্বার্থে তিনি অনেক কিছুই করতে পারেন শুধু দৃষ্টিকটু এবং হাস্যকর না হলেই হলো। আমি লেখক আমি কেন বইয়ের নাম মুখে নেবো এমন ভাবও যেমন ঠিক না আবার মেলায় স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে পরিচিত লোক দেখলে টেনে এনে বই কিনতে বাধ্য করা সেটাও অনুচিত। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বইয়ের প্রচারের পক্ষে। সাবান বিক্রির জন্য যদি বিলবোর্ড হতে পারে আমিতো মনে করি বইয়ের ছবি দিয়েও বড় বড় বিলবোর্ড হওয়া উচিত। সাবান দেহ পরিষ্কার করলে বই পরিষ্কার করে মন। দুটোই জরুরি।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র উপন য স ক জ কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট