কী কারণে হঠাৎ করেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ!
Published: 23rd, February 2025 GMT
সারাবিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এখনও হোয়াটসঅ্যাপ। প্রতিদিন এমন অ্যাপের ব্যবহার করেন কমবেশি সব স্মার্টফোন গ্রাহকই। কিন্তু ব্যবহারের বদলে অপব্যবহার করলে পরিণতি হয় কঠিন। কিছুদিন আগে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সারাবিশ্বে এক মাসেই কোটির বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে তারা। মূলত শর্ত লঙ্ঘন ও প্রতারণামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এমন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মেটা।
জানা গেছে, জালিয়াতি ও সন্দেহজনক অভিযোগ শনাক্তের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিপুল পরিমাণ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অসংখ্য গ্রাহক অনৈতিক অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক আচরণের অভিযোগ জানান মেটা কর্তৃপক্ষের কাছে।
আগেই গ্রাহকের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে বিশেষ রূপরেখার নির্দেশনা দিয়েছিল মেটা। এমন উদ্দেশ্যে ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট প্রকাশ করে মেটা। রিপোর্টে প্রকাশ, মেটা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৪(১)(ডি) এবং ধারা ৩(এ)(৭) ধারার বিধান মেনে চলার জন্য সারাবিশ্বের প্রতিটি দেশেই অভিযুক্ত ও প্রমাণিত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। নজরদারি ও ক্রমাগত অভিযোগ শনাক্তে সমন্বিত প্রচেষ্টার পর এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে
মেটা জানায়।
নিষিদ্ধ অ্যাকাউন্ট
প্রকাশিত মেটার রিপোর্ট বলছে, ১ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে উল্লিখিত পরিমাণ অ্যাকাউন্ট বন্ধ
করা হয়। নিষিদ্ধ সব অ্যাকাউন্টের মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ অ্যাকাউন্ট গুরুতর শর্ত লঙ্ঘনের কারণে তাৎক্ষণিক ব্লক করে কর্তৃপক্ষ। অন্য সব অ্যাকাউন্ট তদন্ত
সাপেক্ষে অভিযুক্ত ও সন্দেহজনক প্রমাণিত হওয়ার পর নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাধারণত যেসব কারণে দ্রুত অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয় তার মধ্যে শর্ত লঙ্ঘন, অনৈতিক কাজ ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ অন্যতম।
শর্ত লঙ্ঘন
কর্তৃপক্ষ থেকে বেঁধে দেওয়া শর্ত ভঙ্গের তালিকায় স্প্যামিং, টানা প্রচুর মেসেজ পাঠানো, প্রতারণামূলক কাজে যুক্ত থাকা ও বিভ্রান্তিকর বা ক্ষতিকারক তথ্যবিনিময় করার মতো কাজ অন্যতম।
অনৈতিক কাজ
আইন অনুসারে অনৈতিক বা অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার জন্য চিহ্নিত সব অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে অভিযুক্ত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বাধ্য হয়েই নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ
সামাজিক প্ল্যাটফর্মে হয়রানি, অপব্যবহার বা অনুপযুক্ত আচরণবিষয়ক গ্রাহক অভিযোগের ভিত্তিতে হোয়াটসঅ্যাপ কঠিন উদ্যোগ নেয়। ক্ষতিকারক প্রমাণ সাপেক্ষে ওই সব অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করে তা যথাযথভাবে নিষিদ্ধ করে মেটা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প হ য় টসঅ য প ন ষ দ ধ কর ব যবহ র অন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫