মানিকগঞ্জ জেলা কমিটি স্থগিত না করায় কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের পদত্যাগ দাবি ও তিন শিক্ষার্থীকে ট্রাক চাপায় হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য পদত্যাগ করা নেতাকর্মীরা।

অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলেও দাবি আদায়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। মহাসড়ক অবরোধ শেষে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামের মালিকানাধীন জাহিদ টাওয়ারের গ্লাস ভাঙচুর করে।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাল দিয়েছিল একাংশের নেতাকর্মীরা। পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী সোমবার বেলা সোয়া ২টার দিকে শহরের খানবাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজের সামনে থেকে একাংশের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের মানরা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় অবরোধের নেতৃত্ব দেন কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম রাজু, যুগ্ম সদস্য সচিব নাসিম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক কাওছার আহমেদ, সদস্য শাকিল হোসেন, রনি আহমেদ ও আকরাম হোসেন।

আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জেলা কমিটি বাতিল না করলে পুনরায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করা হবে বলে ঘোষণা দেন নেতারা। অবরোধ প্রত্যাহার হওয়ার পর পুলিশ মহাসড়কের গাছের গুড়ি ও ইট-পাটকেল সরিয়ে নিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ওমর ফারুককে আহ্বায়ক ও নাহিদ মনিরকে সদস্য সচিব করে ৪২১ সদস্যের মানিকগঞ্জ জেলা কমিটি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি। কমিটির ২০ জনকে বিতর্কিত দাবি করে এবং আন্দোলনে আহতদের বাদ দেওয়াসহ নানা অভিযোগে জেলা কমিটি থেকে আড়াই শতাধিক সদস্য পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ পদত য গ র দ ব

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ