Samakal:
2025-05-01@00:46:56 GMT

ফলন ও দামে খুশি সরিষা চাষি

Published: 24th, February 2025 GMT

ফলন ও দামে খুশি সরিষা চাষি

কেউ জমি থেকে সরিষা গাছ টেনে তুলছেন। কেউ মাটিতে জাল বিছিয়ে সরিষা গাছ স্তূপ করছেন। কেউ মেশিনের সাহায্যে মাড়াই করছেন। মাড়াই শেষে সরিষা বস্তা ভরে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এ দৃশ্য কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথপুর গ্রামের। সরিষার ভালো ফলন ও দামে খুশি গ্রামের কৃষক। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চর জগন্নাথপুর গ্রামে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ১১৯ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ছয় থেকে আট মণ। এতে ওই গ্রামে ৮-৯ হাজার মণ সরিষা ফলেছে। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকা। এতে চরে এবার প্রায় আড়াই কোটি টাকার সরিষার উৎপাদন হবে। ভালো ফলন ও দামে চাষিরা বেজায় খুশি।
চরের কৃষক পিয়ার উদ্দিন মণ্ডল বলেন, জমি বাদে বীজ, সার, ওষুধ ও পরিচর্যা বাবদ বিঘাপ্রতি তিন-চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর টাকা ঘরে এসেছে ১৮ থেকে ২৪ হাজার টাকা। সরিষা চাষে স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভ বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব কৃষক জুনাব আলী খাঁ বলেন, আট-দশ বছর আগে এই চরের বেশির ভাগ এলাকা জলমগ্ন থাকত। বছরে শুধু এক ফসল আউশ ধান হতো। এখন সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ অনেক কিছু হয়। তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। গাছ ও ফল খুব ভালো হয়েছে। এ বছর ভাল অর্থ পাবেন বলে তিনি আশাবাদী। 
তাঁর ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে চর জগন্নাথপুরের চারপাশ পানিতে টইটম্বুর। মানুষ তখন নৌকায় চলাচল করে। পানি শুকিয়ে গেলে কৃষকরা প্রথমে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন এবং পরে ধানের আবাদ করেন। 
মো.

হেলাল নামে অপর কৃষক জানালেন, গত বছর কয়েক দফা বৃষ্টি ও ঝড়ে সরিষা গাছের ফুল পড়ে গিয়ে ফলন কম হয়েছিল। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় বিঘাপ্রতি সাত-আট মণ ফলন হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে দুই মণ বেশি। সরিষার ফলনে কৃষকরা খুশি। 
জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক নওয়াব আলী চলতি মৌসুমে প্রায় ছয় বিঘা জমি থেকে অন্তত ৪৩ মণ সরিষা পেয়েছেন। প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ পড়েছে গড়ে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। গত শনিবার কুমারখালী হাটে তিন হাজার টাকা মণ দরে ১০ মণ সরিষা বিক্রি করেছেন। এবার সরিষা আবাদ করে তিনি প্রায় ১ লাখ টাকা মুনাফা করতে পারবেন বলে আশা করছেন। 
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় দুই হাজার ৭৫৪ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হেক্টর বেশি। তার মধ্যে ১৫০ হেক্টর জমিতে (১ হাজার ১১৯ বিঘা) সরিষার আবাদ হয়েছে উপজেলার চর জগন্নাথপুর গ্রামে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলার চরাঞ্চলে এবার সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে সরিষার বাজারমূল্যও ভালো। এ কারণে সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষক। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ