আট মাস বেতন বন্ধ, কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
Published: 27th, February 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কমিউনিটি ক্লিনিকের সার্বিক চিকিৎসাসেবা ঝিমিয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ ক্লিনিক নিষ্ক্রিয় থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামের গরিব লোকজন। গত আটমাস ধরে কর্মীদের বেতনভাতা বন্ধ থাকায় এ নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গ্রাম পর্যায়ে মা ও শিশুসহ সব বয়সী লোকজনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এখান থেকে ২৭ ধরণের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। অসুখ-বিসুখে ক্লিনিকগুলোর ওপর ভরসা করে গ্রামের মানুষ। কিশোরগঞ্জ জেলায় এ ধরণের কমিউনিটি ক্লিনিক আছে ৩২৩টি। ক্লিনিকের মূল দায়িত্ব পালন করেন একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার বা সিএইচসিপি। তবে গত আটমাস ধরে বেতনভাতা বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়েছে তাদের কাজকর্মে। ফলে ক্লিনিকগুলো অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। ঠিকঠাক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না রোগীরা।
জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের সাঁতারপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে কথা হয় সাঁতারপুর গ্রামের রুমা আক্তার ও সুরাইয়ার সঙ্গে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ছোটখাট অসুখবিসুখ, মাতৃত্বসেবা ও শিশুদের নিয়ে তারা ক্লিনিকে আসেন। আগে ভালোই সেবা পেতেন। গত কয়েকমাস ধরে ক্লিনিক সময়মতো খোলা হয় না। আবার মাঝেমাঝে বন্ধও থাকে। এ কারণে ওষুধপত্রও পাওয়া যায় না। এখন অসুখবিসুখে উপজেলা ও জেলা শহরে যেতে হয় তাদের। একই ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সানজিদা সামান্তা বলেন, ‘‘মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষাসহ বিভিন্ন সেবা নিতে ক্লিনিকগুলোতে প্রান্তিক জনগণ ভিড় করে। গত আটমাস ধরে আমাদের বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে আমাদের অনেক কষ্ট করে খেয়ে না-খেয়ে ক্লিনিকগুলো পরিচালনা করতে হচ্ছে। অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কেউ আবার সংসার খরচ চালাতে অন্যত্র কাজ করতেও বাধ্য হচ্ছেন।’’
আরো পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড
রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, রোগীদের ভোগান্তি
করিমগঞ্জ উপজেলায় মোট কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে ৩৫টি। এরমধ্যে সাঁতারপুর, জঙ্গলবাড়ি, হাত্রাপাড়া, সতেরদরিয়া, পিটুয়া ও টামনি পিটুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে সরেজমিন স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সময়মতো ক্লিনিকগুলো না খোলা, আবার কখনো বন্ধ থাকায় কিংবা খোলা হলেও দায়িত্বপ্রাপ্তদের অনুপস্থিতির কারণে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। শুধু করিমগঞ্জ নয়, তাড়াইল উপজেলার আরো চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গিয়েছে।
তবে যে কর্মীরা ১২ মাস গ্রামবাসীকে চিকিৎসাসেবা দেয়, তাদের দুর্বস্থার কথা শুনে ব্যথিত গ্রামের লোকজনও। পিটুয়া গ্রামের জিল্লুর রহমান বলেন, ‘‘সিএইচসিপিদের কষ্ট দেখে আমাদের খারাপ লাগে। আমরা কর্মীদের উজ্জীবিত করে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বেগবান করার দাবি জানাচ্ছি। সরকার যেন এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।’’
হাত্রাপাড়া ও টামনি পিটুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জাহেদুল ইসলাম তুহিন ও হাবিবা আক্তার বলেন, ‘‘আমাদের যে ভাতা দেওয়া হতো, তা দিয়ে আমাদের সংসার চলত না। আমাদের দাবি ছিল আমাদের যেন রাজস্বখাতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজস্বখাততো দূরে থাক, এখন আমাদের বেতনটুকুও বন্ধ রয়েছে আটমাস ধরে। পেটে ভাত না থাকলে দায়িত্ব পালন করব কীভাবে? এরপরও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’’
সিভিল সার্জন কার্যালয় বলছে, গত বছরের জুলাই থেকে সিএইচসিপিদের বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে। কেবল কিশোরগঞ্জের ৩২৩ জন নয়, সারা দেশের ১৮ হাজার হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারের বেতনও বন্ধ রয়েছে। সমস্যা সমাধানে নিয়মিত যোগাযোগ চলছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা.
ঢাকা/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন ধ থ ক য় ক শ রগঞ জ আম দ র বন ধ র উপজ ল ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।
প্রশিক্ষণের বিষয়১. বেসিক কম্পিউটার,
২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,
৩. ইন্টারনেট,
৪. গ্রাফিক ডিজাইন,
৫. ফ্রিল্যান্সিং,
৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,
২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,
৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,
৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,
৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে১. ঢাকা,
২. চট্টগ্রাম,
৩. রাজশাহী,
৪. খুলনা,
৫. বরিশাল,
৬. সিলেট,
৭. দিনাজপুর,
৮. গোপালগঞ্জ।
আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,
২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,
৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,
৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,
৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।
নিবন্ধন ফিমনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।
দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে