২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশ করেছে এমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবীন লেখকদের সংবর্ধনা দিয়েছে শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। এসব লেখকদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ টাকা উপহার হিসেবে দিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এ নবীন লেখক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। 

ঢাবি শাখা শিবিরের সাহিত্য সম্পাদক মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নবীন লেখকরা তাদের বক্তব্যে নিজেদের প্রকাশিত বইয়ের রিভিউ উপস্থাপন ও ছাত্রশিবিরের প্রতি তাদের নানা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

আরো পড়ুন:

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ঢাবিতে সেমিনার

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা 

‘জুলাই ও একটি লাল মাশরিক’ বইয়ের লেখক জয়েনউদ্দীন সরকার তন্ময় বলেন, “নবীন লেখকদের নিয়ে ছাত্রশিবিরের এ আয়োজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখালেখির প্রতি উৎসাহিত করবে।”
 
‘হাজার রঙের ক্যানভাস’ বইয়ের লেখক ফাহমিদুল হাসান বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, শিবির নবীন লেখকদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা আয়োজন করবে, ভালোমানের সাহিত্য পত্রিকা বের করবে, লেখকদের গ্রুমিং করবে। একটি নতুন বই প্রকাশের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা থাকে, সে বিষয়ে নজর দিতেও আহ্বান জানাচ্ছি।”

ঢাবি শিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “নবীন লেখকদের নিয়ে আমাদের সাহিত্য বিভাগের অনেকগুলো পরিকল্পনা রয়েছে, তাদের সংবর্ধনার মাধ্যমেই আমরা শুরু করলাম। এটি আমাদের একটি এক্সক্লুসিভ আয়োজন। এরপর প্রকাশক-লেখকদের মতবিনিময় সভা আয়োজন করার চিন্তা রয়েছে। এছাড়াও প্রবীণ ও নবীন লেখকদের সমন্বয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা আয়োজন, বই প্রকাশের প্রতিবন্ধকতা যত সহজে কমানো যায়, সে বিষয়েও আমরা কাজ করবো, ইনশাআল্লাহ।”
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “লেখকরা হচ্ছেন সমাজের সামষ্টিক প্রতিনিধি, যারা অতীত ও বর্তমানকে তাদের লেখার সঙ্গে সমন্বয় করে তুলে ধরেন। অনেকেই লেখালেখিকে নিরুৎসাহিত করেন। কিন্তু আমরা বলতে চাই, লেখালেখি হচ্ছে সদকায় জারিয়ার কাজ। লেখকরা তো সমাজের চিন্তার গঠনকে নিয়ন্ত্রণ করেন।”

শিবির জ্ঞানভিত্তিক একটি সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা প্রতি মাসে ১২টি মাসিক পত্রিকা বের করি। যেখানে ইংরেজি, আরবি ও বাংলা ভাষায় সব শিক্ষার্থীর বাংলা-ইংরেজি মাধ্যম, আলিয়া, কওমি, প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়। এর মাধ্যমে ব্যাপক নবীন লেখক তৈরি হচ্ছে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খকদ র স

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ